নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাসখানেক আগে হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মধ্যে আরও ২১ জনের মরদেহ শনিবার বুঝে নিয়ে তাদের পরিবার।
Published : 07 Aug 2021, 02:18 PM
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার রোমানা আক্তার জানান, শনিবার দুপুরে ২১টি মৃতদেহ স্বজনরা গ্রহণ করেছেন।
এ নিয়ে দুই দফায় ৪৫ জনের মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হল। এর আগে গত ৪ অগাস্ট হস্তান্তর করা হয়েছিল ২৪ জনের মরদেহ।
সিআইডির কর্মকর্তা রোমানা আক্তার বেগম বলেন, গত বুধবার শনাক্ত হওয়া ২৪টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে আর শনিবার ২১টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলো।
“ডিএনএ পরীক্ষায় ৪৫ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। বাকি লাশের ডিএনএ পরীক্ষার কাজ চলছে।”
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জের মাহমুদার মৃতদেহ হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ভোলার হাসনাইনের (১২) মরদেহ গ্রহণ করেন তার পরিবার।
হাসনাইনের বাবা ফজলুর রহমান বলেন, “মোতালেব দালাল আমার ছেলেটাকে এনে হত্যা করল।”
অমৃতার বেগমের (৩৫) মৃতদেহ গ্রহণ করেন তার মা ও বোন। অমৃতার স্বামী সেলিমের অভিযোগ, সিআইডি তার কাছে মৃতদেহ দেয়নি।
তবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে উপস্থিত সিআইডির এক কর্মকর্তা বলেন, “অমৃতা সেলিমের দ্বিতীয় স্ত্রী। পারিবারিক ঝামেলা থাকায় মার কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।”
গত ৮ জুলাই হাসেম ফুডস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ওই ঘটনায় অন্তত ৫১ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজনের লাশ তখনই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বাকি লাশগুলো এতটাই পুড়ে গিয়েছিল যে চোখে দেখে সেগুলো শনাক্ত করার উপায় ছিল না। ফলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় শনাক্তের জন্য লাশগুলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। ৪৮টি মৃতদেহ শনাক্ত করার জন্য ৬৮ জন স্বজনের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি।
হাসেম ফুডসে আগুন লাগার প্রায় ২০ ঘণ্টা পর ওই কারখানা থেকে মোট ৪৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করার কথা জানিয়েছিল ফায়ার সার্ভিস। সেসব দেহাবশেষ তারা ৪৮টি বডি ব্যাগে ভরে পাঠিয়েছিল ঢাকা মেডিকেলের মর্গে।
কিন্তু সেখানে পুলিশ ৪৮টি ব্যাগে ৪৮ জনের মরদেহ ধরে নিয়ে সেভাবেই ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করে।
এখনও যেহেতু চারজনের লাশের দাবি করছেন স্বজনরা, সেহেতু পোড়া লাশ ৪৯টিই ছিল কিনা জানতে চাইলে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার রোমানা আক্তার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, “সিআইডি ৪৮টি ব্যাগে ৪৮ মৃতদেহের পরীক্ষা করছে। ৪৫ জন শনাক্ত হয়েছে আর বাকি তিনটি রয়েছে। তবে দাবিদার কতজন তা আমরা বলছি না।
“আমরা বৈজ্ঞানিক উপায়ে কাজ করছি। ডিএনএ পরীক্ষা করব এবং নমুনার সঙ্গে যাদের মৃতদেহ মিলবে, সেসব স্বজনের মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।”