নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে ‘মারধরের’ মামলায় সংসদ সদস্য হাজি মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে দেওয়া হাই কোর্টের জামিন সর্বোচ্চ আদালতেও বহাল রয়েছে।
Published : 25 Apr 2021, 12:09 PM
জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের আবেদন খারিজ করে দিয়ে রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মো. মোরশেদ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর ইরফান সেলিমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী বাসেত মজুমদার ও সাঈদ আহমেদ রাজা।
আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা পরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সর্বোচ্চ আদালত রাষ্ট্রপক্ষের লিভটু আপিল খারিজ করে হাই কোর্টের জামিন বহাল রেখেছেন। ইরফান সেলিমের মুক্তিতে এখন আর কোনো বাধা থাকছে না।”
গত বছর ২৪ অক্টোবর ধানমণ্ডি এলাকায় সংসদ সদস্যের স্টিকার লাগানো সেলিমের একটি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট মো. ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর করা হয়।
ওই ঘটনায় সেলিমের ছেলে ইরফানসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ওয়াসিফ।
পরদিন পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটের দেবীদাস লেইনে হাজী সেলিমের বাড়ি থেকে ইরফানকে আটক করার সময় অস্ত্র ও বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়।
মদ আর ওয়াকিটকির জন্য ইরফান ও তার দেহরক্ষীকে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাস করে এক বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পরে অস্ত্র ও মাদক আইনে আলাদা মামলা দায়ের করা হয় ইরফানের বিরুদ্ধে; ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পদ থেকেও তাকে বরখাস্ত করা হয়।
পরে পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় মাদক ও অস্ত্র মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে ‘মারধরের’ মামলায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি ইরফানসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
ওই মামলায় অধস্তন আদালতে জামিন না পেয়ে হাই কোর্টে আসেন ইরফান সেলিম। তার আবেদনে সাড়া দিয়ে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে দেওয়া রুল জারি করা হয়।
ওই রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের বেঞ্চ ১৮ মার্চ ইরফানকে জামিন দেয়।
কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে চেম্বার আদালত ২৮ মার্চ চার সপ্তাহের জন্য তার জামিন স্থগিত করে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠায়।
এদিকে জামিনে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের জন্য ইরফান সেলিমও চেম্বার বিচারপতির আদালতে আবেদন করেন। এর মধ্যে হাই কোর্টের রায়ের অনুলিপি পেয়ে লিভটু আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
২২ এপ্রিল আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আবেদন দুটি উত্থাপন করা হলে আদালত রোববার শুনানির জন্য রাখে।
শুনানির পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনটি খারিজ করে দিয়ে হাই কোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখে সর্বোচ্চ আদালত।