সাতই মার্চ উদযাপনে বাহারি সাজে ‘রেসকোর্স ময়দান’

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণের দিন উদযাপনে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দান সেজেছে ফেস্টুন, বেলুন আর লাল-সবুজের আলোতে।

কাজী মোবারক হোসেনবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2021, 02:57 PM
Updated : 7 March 2021, 02:57 PM

শোষণমুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত বাঙালির স্বাধীনতার ডাক এসেছিল যেদিন, সেই দিনটি এবার এসেছে ভিন্ন মহিমায়; স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর সঙ্গে চলছে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর উদযাপন।

জাতির মুক্তি সংগ্রামের স্বপ্নে ধারাবাহিক আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সেই ভাষণে স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে বাঙালি, সেই ভাষণ আজ বিশ্ব সভায় সমাদৃত।
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ তৎকালীন রেসকোর্সের (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) জনসমুদ্রে ২৩ বছরের বঞ্চনার ইতিহাস ১৯ মিনিটে তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু সেদিন বলেছিলেন, “রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”

রোববার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে দেখা যায়, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের সামনের গেইটে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের কিছু অংশ তুলে ধরে বড় আকারে ফেস্টুন টানানো হয়েছে।

উদ্যানের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী বীর শহীদদের অমর স্মৃতি চিরজাগ্রত রাখার জন্য ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিখা চিরন্তনের চারপাশ সাজানো হয়েছে। এ স্থান থেকেই ‘মুক্তির সংগ্রাম ও স্বাধীনতা সংগ্রামের’ ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

শিখা চিরন্তনের দুই পাশে মাটির দেয়ালে বঙ্গবন্ধু অবয়ব এঁকে দেওয়া হয়েছে; চারপাশে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। উদ্যানের ছোট ছোট গাছে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সম্বলিত ফেস্টুন ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

স্বাধীনতার জন্য বিভিন্ন সময়কার আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণের ছবি দিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গড়ে তোলা স্বাধীনতা জাদুঘরকেও নতুন করেও সাজানো হয়েছে। জাদুঘরের সামনে বাজানো হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ।
ঐতিহাসিক দিনটিতে বঙ্গবন্ধুর ভাষণস্থলে কবি-সাহিত্যিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বিকাল থেকে বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে তৈরি কবিতা পাঠ করেন বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ আন্তর্জাতিক পর্ষদ নামের একটি সংগঠনের কর্মীরা।

কবিতা পাঠ শেষে দেশবরেণ্য কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, সাতই মার্চেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা, মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি একমাত্র সেই ব্যক্তি যার কারণে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে।

“এখানে যে কোনো বাঙালি আসলে বলবে আমি মুক্তি চাই। বঙ্গবন্ধু সাতই মার্চের এই ঘোষণাটা জাতির মুক্তির ঘোষণা। তারপর এই ভূ-ভারতে যত জাতি আছে সকল জাতির মধ্যে যে এক জন শেখ মুজিবর আছেন- এটা তাদের জন্য ঘোষণা, পৃথিবীব্যাপী যত জাতি-গোষ্ঠী আছে- এটা তাদের স্বাধীনতার ঘোষণা।
“বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ঘোষক বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক, জাতি রাষ্ট্রের ঘোষক, সারা পৃথিবীর জাতি রাষ্টের স্বাধীনতার ঘোষক। সব শেষে মানব জাতির মুক্তির ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান।”