চাকরি জাতীয়করণ হওয়ার পর শিক্ষকদের একটি অংশের ভোগ করা টাইম স্কেলের সুবিধা ফেরত দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত (পরিপত্র) চ্যালেঞ্জ করে যে রিট আবেদন হয়েছিল, হাই কোর্টে তার নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
Published : 13 Jan 2021, 01:50 PM
সেজন্য হাই কোর্টে একটি বেঞ্চও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। আদেশ পাওয়ার তিন সপ্তাহের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলা হয়েছে।
তবে টাইম স্কেল ফেরত দিতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাই কোর্টের দেওয়া আদেশ আপাতত স্থগিতই থাকছে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত হাই কোর্টের আদেশটি স্থগিত করেছিল। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চ তাতে পরিবর্তন না এনে বুধবার রিট আবেদনটি নিষ্পত্তি করার আদেশ দিল।
আদালতে রিটকারী পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোকছেদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস।
পরে মোকছেদুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাই কোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হবে বলে আপিল বিভাগ ঠিক করে দিয়েছে।
“তিন সপ্তাহের মধ্যে রিট মামলাটি নিষ্পত্তি করতে বলেছে আপিল বিভাগ। তবে হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালত যে আদেশ দিয়েছিল, তা বহাল থাকছে।”
২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি জাতীয় প্যারেড স্কয়ারে প্রাথমিক শিক্ষক সমাবেশে দেশের ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ১ লাখ ৪ হাজার ৭৭২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সে ঘোষণা বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপতির আদেশে পরিপত্র ও গেজেট প্রকাশ করা হয়। সেই পরিপত্র ও গেজেটের ভিত্তিতে জাতীয়করণ হওয়া প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা সরকারের আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছিলেন।
কিন্তু গত বছর ১২ অগাস্ট অর্থ মন্ত্রণালয় ৪৮ হাজার ৭২০ জন শিক্ষকের টাইম স্কেল ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করে।
আদেশটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত বছর ৩১ অগাস্ট হাই কোর্টে রিট আবেদন করা হয়। বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজশাহীর গাঙ্গোপাড়া বাগমারা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমানসহ কয়েকজন শিক্ষক সেই আবেদনটি করেন।
ওই দিন হাই কোর্ট ছয় মাসের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করে। এরপর হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে যায় রাষ্ট্রপক্ষ।
সে আবেদনের শুনানি করে ১৩ সেপ্টেম্বর চেম্বার বিচারক হাই কোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেয়। তখন চেম্বার আদালতের আদেশ বাতিল চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রিটকারী পক্ষ। বুধবার সে আবেদনের শুনানি করে আদেশ দিল সর্বোচ্চ আদালত।