সারাদেশে একের পর এক ধর্ষণ-নিপীড়নের বিচার দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে কালো পতাকা মিছিলে পুলিশ বাধা দেওয়ার পর হাতাহাতি ও লাঠিপেটার ঘটনা ঘটেছে।
Published : 06 Oct 2020, 02:33 PM
পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড়ো হয়ে 'ধর্ষণ ও নিপীড়নবিরোধী ছাত্র-জনতা'র ব্যানারে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা।
প্রগতিশীল বিভিন্ন সংগঠনের নেতা-কর্মী, লেখক, কবি, শিল্পী, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও নারী অধিকারকর্মীরাও তাতে যোগ দেন।
বেলা সোয়া ১টার দিকে তারা শাহবাগ মোড় থেকে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকা ঘুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে যাত্রা করলে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে পুলিশ তাদের আটকে দেয়।
এ সময় পুলিশের সাথে মিছিলকারীদের হাতাহাতি হয়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করলে ছাত্র ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী আহত হন।
'ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই, 'ধর্ষকের আস্তানা, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও', 'যে রাষ্ট্র ধর্ষণ পোষে, সেই রাষ্ট্র চাই না', আমার বোনকে ধর্ষণ কেন, প্রশাসন জবাব চাই, 'নিপীড়ক যেখানে, লড়াই হবে সেখানে'- ইত্যাদি স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে ওই এলাকা।
প্রায় আধা ঘণ্টা সেখানে অবস্থান শেষে মিছিলকারীরা আবার শাহবাগে হয়ে টিএসসি এলাকায় ফিরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান নেন।
সেখান থেকে সন্ধ্যায় শাহবাগে মশাল মিছিল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করার কর্মসূচি ঘোষণা করেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।
ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনীক রায় বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পুলিশ আটকে দিয়েছে, নেতাকর্মীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। আমাদের আটজন নেতা-কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে গেছেন।
“পুলিশ ধর্ষকদের গ্রেপ্তার না করে আন্দোলনকারীদের উপর ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে।এর প্রতিবাদে আমরা সন্ধ্যায় শাহবাগে মশাল মিছিল এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কুশপুত্তলিকা দাহ করব।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি সাখাওয়াত ফাহাদ বলেন, মিছিলে ‘পুলিশের হামলায়’ ছাত্র ইউনিয়ন মোহাম্মদপুর থানা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন শুভর হাত ভেঙে গেছে।
‘গুরুতর আহত’ হয়েছেন একই শাখার কোষাধ্যক্ষ ইরফান খান প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক ইমন শিকদার, সদস্য অর্ণব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক আসমানী আশা, ঢাকা মহানগর সংসদের সদস্য মাহমুদা দীপা, ধানমণ্ডি থানা শাখার সাধারণ সম্পাদক তাহমিদ তাজোয়ার শুভ্র, লালবাগ থানা শাখার সদস্য রাসেল রহমান।
আহতদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান ফাহাদ।
লাঠিপেটা করার বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, “রাস্তায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে আমাদের পুলিশ শাহবাগ শাকুরা পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল। আন্দোলনকারীরা ব্যারিকেডের তালা ভেঙে পুলিশের উপর চড়াও হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের মাঝে সংঘর্ষ হয়েছে।”
পুলিশ আগ বাড়িয়ে কোনো হামলা করেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “তারা এসেই আমাদের উপর চড়াও হয়েছে। সেক্ষেত্রে পুলিশ আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছে।”
সাজ্জাদুর রহমান বলেন, যারা আহত হয়েছেন, তাদের দেখতে দুজন পুলিশ পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে ‘সিনিয়রদের’ সঙ্গে কথা বলে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।