করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে উপার্জন হারানো এক দরিদ্র ভাড়াটিয়া ও তার ছেলেদের পিটিয়ে আহত করলেন পুরান ঢাকার একজন বাড়িওয়ালা।
Published : 20 May 2020, 01:18 AM
মঙ্গলবার বিকালে হোসনী দালানের শিয়া গলিতে এ ঘটনায় বাড়ির মালিক রাজু আহমেদ (৪৫) এবং তার ভাতিজা সোহানকে (২০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আহত ভাড়াটিয়া মো. হান্নান (৫০) এবং তার দুই ছেলে আল আমিন ও সাইদুলকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
তাদের তিনজনের শরীরেই জখমের চিহ্ন রয়েছে এবং আল আমিনের মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে বলে পুলিশের চকবাজার জোনের সহকারী কমিশনার ইলিয়াছ হোসেন জানিয়েছেন।
হান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফুটপাতে পিঠা বিকি করেন। আর তার ছেলেরা মুড়ি বিক্রি করেন। এর থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই তাদের সংসার চলে। গত পাঁচ বছর ধরে রাজু আহমেদের বাড়ির নিচতলায় ১২ হাজার টাকায় ভাড়া থাকছেন।
“কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে গত তিন মাসে ভাড়া দিতে পারি নাই। বিকালে রাজু আমার বাসার সামনের রাস্তায় আমার কাছে ভাড়া চায়। তখন অনুরোধ করি যে, পরিস্থিতি তো খারাপ, দয়া করে কয়েক দিন অপেক্ষা করেন। আর যদি না মানেন তাহলে অগ্রিম দেওয়া ৪০ হাজার টাকা থেকে কেটে রাখেন।
“অগ্রিম টাকা থেকে কাটার কথা বলতে না বলতেই রাজু আমাকে কিলঘুষি মারতে শুরু করে। এ সময় রাজুর ভাতিজা সোহানও এসে আমাকে কিলঘুষি মারতে শুরু করে। আমাকে মারতে দেখে আমরা দুই ছেলে আল আমিন ও সাইদুল এগিলে আসলে তাদেরকে ব্যায়াম করার স্টিলের পাত দিয়ে আঘাত করতে শুরু করে।”
পরে আশপাশের লোকজন ও পুলিশ এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসে বলে জানান হান্নান।
তিনি বলেন, মারধরের পরপরই বাড়িওয়ালা তাদের ঘরে তালা মেরে দিয়েছিল। পরে পুলিশের সহযোগিতা আবার তারা ওই বাসায় উঠেছেন।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর যেখানে নির্দেশনা রয়েছে, এই সময় ভাড়াটিয়াদের প্রতি এবং দুঃস্থদের প্রতি মানবিক ও সহযোগিতার হাত বাড়ানোর সেখানে এমন একটি ন্যক্কারজনক কাজ করা হয়েছে।”
রাজু ও তার ভাতিজাকে আসামি করে মামলা হয়েছে জানিয়ে চকবাজার থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, বুধবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, “যারা এই ধরনের ফৌজদারি অপরাধ করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”