রোহিঙ্গারা চাইলে তবেই ভাসানচরে স্থানান্তর: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কক্সবাজারে আশ্রয়শিবিরে থাকা রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় নোয়াখালীর ভাসানচরে যেতে চাইলেই তাদের সেখানে স্থানান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2019, 11:47 AM
Updated : 27 March 2019, 11:54 AM

বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক অনুষ্ঠানের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “যদি সবাই (আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়) চায়, যদি তারা (রোহিঙ্গা) রাজি থাকে, কেবল সেক্ষেত্রেই এটা হবে।”

কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির ও তার বাইরে অবস্থান নিয়ে থাকা প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে নিয়ে নানা সামাজিক সমস্যা সৃষ্টির প্রেক্ষাপটে তাদের একটি অংশকে হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার বিরান দ্বীপ ভাসান চরে স্থানান্তরের এই পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে ২৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে মোটামুটি ১০ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সরকার বলছে, রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য সব ব্যবস্থাই ভাসান চড়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। সেখানে গেলে কক্সবাজারের ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্প জীবনের চেয়ে ভালো থাকবে তারা।

তবে সাগরের ভেতরে জনমানবহীন ওই চরে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তরের পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার মধ্যে।

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সম্প্রতি ওই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানালেও তারা বলেছে, স্থানান্তরের বিষয়টি অবশ্যই রোহিঙ্গাদের সম্মতির ভিত্তিতে হতে হবে।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আশ্বস্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যে ব্যবস্থা ওখানে করা হচ্ছে, তা ব্যাপক। তারা যাতে একটু ভালো থাকতে পারে সেজন্যই আমরা এটা করছি।  এখন সবাই যদি এটাকে সমস্যা মনে করে, আমরা তাদের সেখানে পাঠাবো না।  আর সবাই যদি বলে যে তারা স্বেচ্ছায় সেখানে যাবে, আমরা তাদের স্থানান্তর করব “

হাতিয়া থানাধীন চর ঈশ্বর ইউনিয়নের ভাসান চরে এই আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী। ২০১৯ সালের নভেম্বরের মধ্যে সেখানে ১২০টি গুচ্ছ গ্রামে ১৪৪০টি ব্যারাক হাউজ ও ১২০টি আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

জনমানবহীন চরটি আগে মূলত গরু-মহিষের চারণভূমি হিসেবে ব্যবহৃত হত। ২০১৩ সালে এ চরকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল এলাকা ঘোষণা করা হয়। ইঞ্জিনচালিত নৌযান ছাড়া সেখানে যাতায়াতের সুযোগ নেই। হাতিয়া থেকে যেতেও তিন থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা সময় লাগে।