টিআইয়ের দুর্নীতির সূচক তৈরিতেই ট্রান্সপারেন্সি নেই: তথ্যমন্ত্রী

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচকে এ বছর বাংলাদেশের অবস্থানের অবনমনের পর সংস্থাটির কাজের পদ্ধতি নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2019, 11:16 AM
Updated : 30 Jan 2019, 11:16 AM

সচিবালয়ে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে টিআই-এর কঠোর সমালোচনাও করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান। তাদের ওই প্রতিবেদন ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণাসূচকে এবার বাংলাদেশের অবস্থান ছয় ধাপ অবনমন ঘটেছে। সূচকের ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী (ভালো থেকে খারাপ) বাংলাদেশের অবস্থান ১৪৯ নম্বরে। ১৮০টি দেশের মধ্যে গতবার বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৪৩ নম্বরে।

কোন পদ্ধতিতে টিআই এই ধারণাসূচক তৈরি করেছে তা তারা সুনির্দিষ্টভাবে স্পষ্ট করেনি মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “তাদের দুর্নীতির সূচক নিরূপণের মেথডোলজি কিছু তথাকথিত বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ীর মতামত গ্রহণ করা এবং তাদের বিভিন্ন জায়গায় কিছু কমিটি আছে নানা নামে, সেই সমিতি বা কমিটির মাধ্যমে কিছু তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা। তাদের মেথডোলজিটাই ক্রটিপূর্ণ।

“তারা যে পদ্ধতি ব্যবহার করে সেটি স্বচ্ছ নয়। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির সূচক তৈরির পদ্ধতিটার মধ্যেই ট্রান্সপারেন্সি নাই। অর্থাৎ যে পদ্ধতিতে তারা কাজ করে সেটাই ট্রান্সপারেন্ট নয়। এটা করে আন্তর্জাতিকভাবে দেশ, দেশের জনগণ এবং সরকারকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে মাত্র।”

হাছান মাহমুদ বলেন, “দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন ক্রটিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদ্ধতি এবং কিছু মানুষের মনগড়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনৈতিক হাতিয়ার তুলে দেওয়ার উদ্দেশ্যে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বলে আমরা মনে করি, এটি সমীচীন নয়।”

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে বিএনপি অভিযোগ উত্থাপন করে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল নির্বাচন নিয়ে যে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে সেটার সঙ্গে বিএনপির বক্তব্যের ‘৮০ শতাংশ মিল’।

“তাদের বক্তব্য দেখে মনে হয়েছে, বিএনপির হয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছে। দুদকও প্রশ্ন তুলেছে, তারা প্রতিবেদন চেয়েছে। কোন পদ্ধতিতে প্রতিবেদন করেছে সেটা দুদক চেয়েছে, আশা করি তারা (টিআই) ব্যাখ্যা দেবে।”

টিআইবিকে উদ্দেশ করে মন্ত্রী বলেন, “কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে দুদককে জানান এবং সরকারের কাছে উপস্থাপন করুন, সরকার যথাপোযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

“দয়া করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে এবং বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ করবেন না। আপনাদের কাজের পদ্ধতির মধ্যে যে ট্রান্সপারেন্সির অভাব আছে সেটা দূর করুন।”

বিএনপির আমলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের দুর্নীতির ধারণাসূচকে বাংলাদেশ তিনবার প্রথম হলে তখন আওয়ামী লীগ স্বাগত জানায়, এখন কেন এই প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করছেন?

একজন সাংবাদিকের এই প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “তখন যথেষ্ট কারণ ছিল, রাষ্ট্রীয়ভাবে দুর্নীতি হয়েছে এবং সেটি প্রমাণিত হয়েছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নির্বাহীর দুর্নীতির মধ্যে জড়ানোর বিষয় প্রমাণিত হয়েছে।

“খালেদা জিয়া নিজেই কালো টাকা সাদা করেছেন, তার অর্থমন্ত্রী কালো টাকা সাদা করেছেন, তার দুই পুত্রের দুর্নীতি বিদেশে প্রমাণিত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দেশে এসে এফবিআই সাক্ষ্য দিয়ে গেছে, সেগুলো প্রমাণিত, তখন যথেষ্ট কারণ ছিল। এখন কোন কারণের ভিত্তিতে, কোন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে, কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এটি টিআইবির প্রতিবেদনের রায়, তাদের প্রতিবেদনটি অস্বচ্ছ।”