জিয়াসহ যাদের নাম তদন্ত প্রতিবেদনে থাকছে, তারা সবাই নিষিদ্ধ আনসার আল ইসলামের সদস্য।
এই জঙ্গি গোষ্ঠির সামরিক কমান্ডারের দায়িত্বে থাকা জিয়ার পরিকল্পনা এবং নির্দেশেই এই হত্যার ঘটনা ঘটানো হয় বলে শুরু থেকেই বলে আসছিল পুলিশ।
এই হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার মইনুল হাসান শামীমের জবানিতেও উঠে এসেছিল এই জিয়ার নাম।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মনিরুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুরে মিন্টো রোডে সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৫ সালের ৩১ অক্টোবর ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডে আনসার আল ইসলামের নয় জঙ্গি জড়িত ছিল।
“এদের মধ্যে ছয়জনকে গ্রেপ্তার আছে। এরা হলেন- সুনামগঞ্জের মইনুল হাসান শামীম (২৪), কুমিল্লার মো. আব্দুস সবুর (২৩), চট্টগ্রামের খায়রুল ইসলাম (২৪), মো. শেখ আব্দুল্লাহ (২৭), লালমনিরহাটের মো. আবু সিদ্দিক সোহেল (৩৪) ও ময়মনসিংহের মো. মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন (২৫)।
“এই ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে এবং দীপন হত্যাকাণ্ডে কার কী ভূমিকা তা বলেছে। গ্রেপ্তাররা জানিয়েছে, সাংগঠনিক সিদ্ধান্তেই দীপনকে হত্যা করা হয়েছে।”
মনিরুল বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী সেনাবাহিনী থেকে চাকরিচ্যুত সৈয়দ জিয়াউল হক ও ঢাকার আকরাম হোসেন হাসিব পলাতক।
“পলাতক নবম জঙ্গির নাম-ঠিকানা পাওয়া গেলে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।”
অনুমোদনের জন্য অভিযোগপত্রটি সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে বলে জানান মনিরুল।
দীপন হত্যা মামলাটি তদন্ত করছে গোয়েন্দা পুলিশ।
২০১৫ সালে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা চলার সময় টিএসসিতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তমনা লেখক-ব্লগার অভিজিৎ রায়কে। এরপর কয়েক মাসের ব্যবধানে আরও কয়্জেন ব্লগার-লেখককে হত্যা করা হয়।
নৃশংস ওই খুনের ধারাবাহিকতায় ওই বছরের ৩১ অক্টোবর শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটের তৃতীয় তলায় জাগৃতি প্রকাশনীর কার্যালয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় ফয়সল আরেফিন দীপনকে।
ওইদিনই লালমাটিয়ায় আরেক প্রকাশনা সংস্থা শুদ্ধস্বরের কার্যালয়ে ঢুকে এর কর্ণধার আহমেদুর রশীদ চৌধুরী টুটুলসহ তিনজনকে একই কায়দায় কোপানো হয়।
ওই দুই প্রকাশনা থেকেই বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায়ের বই প্রকাশিত হয়।
একই দিনে দুই প্রকাশকের ওপর হামলার পেছনে নিষিদ্ধ আনসারুল্লাহ বাংলাটিমকে সন্দেহের তালিকায় রেখেছিল পুলিশ। এর আগে অভিজিৎ রায়সহ ব্লগার হত্যার তদন্তেও ওই জঙ্গি সংগঠনটির নাম উঠে আসে। পুলিশের ধারণা, আনসারুল্লাহ বাংলাটিমই নাম বদলে আনসার আল ইসলাম নামে সক্রিয়।
দীপন হত্যার ঘটনায় শাহবাগ থানায় তার স্ত্রী ডা. রাজিয়া রহমান অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেছিলেন।
মামলার তদন্ত শুরুর পর দফায় দফায় প্রতিবেদন জমার তারিখ পেছানোয় হতাশা প্রকাশ করেছিল দীপনের পরিবার।
অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করায় এবং কোনো সূত্র না থাকায় (ক্লুলেস) তদন্তে লম্বা সময় লেগেছে বলে এক প্রশ্নে জানান পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম।
আরও খবর