শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ২৯ মামলা, গ্রেপ্তার ৩৩

নিরাপদ সড়কের দাবিতে গত নয় দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় গাড়ি ভাংচুর, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে এ পর্যন্ত মোট ২৯টি মামলা করেছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 August 2018, 10:44 AM
Updated : 8 August 2018, 07:57 AM

অর্ধ শতাধিক শিক্ষার্থীকে আটক করলেও এসব মামলায় সোমবার পর্যন্ত গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে ৩৩ জনকে।

রোববার বিকাল পর্যন্ত ২৯টি মামলায় ১১ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (ক্রাইম) মো. মুনতাসিরুল ইসলাম।

সোমবার সকালে এই তথ্য জানানোর সময় তিনি বলেছিলেন, “মামলা ও গ্রেপ্তারের সংখ্যা বাড়তে পারে।”

সোমবার দিনভর নর্থসাউথ ও ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘাতের পর ভাটারা ও বাড্ডা থানায় আরও দুটি মামলা হয়।

এই দুই মামলায় ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থসাউথ, সাউথইস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখানোর কথা জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে পুলিশের মিরপুর ও উত্তরা বিভাগে ৩টি করে, ওয়ারী বিভাগে ২টি, রমনা ও মতিঝিল বিভাগে ৬টি করে, শাহবাগ, তেজগাঁও, লালবাগ ও গুলশান বিভাগে একটি করে মামলা হয়।

মামলাগুলোতে আসামি কারা জানতে চাইলে নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা তো আর গাড়ি ভাংচুর, মারামারি করেনি। এখানে তৃতীয়পক্ষ ঢুকে ভাংচুর ও মারামারিসহ পুলিশের ওপর হামলা করেছে। সুতরাং ওইভাবে তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।”

রোববার শাহবাগে গাড়ি ভাংচুরের ঘটনায় একটি মামলা এবং ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তবে আসামির সংখ্যা জানাননি শাহবাগের ওসি আবুল হাসান।

শনিবার জিগাতলায় মারামারির ঘটনায় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে।

সোমবারের ঘটনায় তেজগাঁওয়ের আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বসুন্ধরার নর্থ সাউথ ও বাড্ডার ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘাত বাঁধে। ওই সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৭৫ শিক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশ।

এরপর ভাটারা ও বাড্ডা থানা পুলিশ ইস্ট ওয়েস্ট, নর্থ সাউথ, সাউথ ইস্ট ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ শিক্ষার্থীকে পুলিশের উপর হামলা এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার দেখায়।

ভাটারা থানার ওসি কামরুজ্জামান এবং বাড্ডা থানার উপ পরিদর্শক জুলহাস মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী রামপুরা থানায়ও আটক রয়েছেন ওই থানার ওসি প্রলয় কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তারা ছাত্র। যাচাই-বাছাই করে তাদের অভিভাবকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে।”

আহসান উল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আটক শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশের কাজে বাধা এবং গাড়ি ভাংচুরের অভিযোগে মামলা করা হবে।

গত ২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই ছাত্রছাত্রীর প্রাণহানির পর ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান; ভাংচুর করা হয় বেশকিছু গাড়ি।

এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যেই গত শনি ও রোববার ঢাকার ধানমণ্ডিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতের ঘটনাও ঘটে।