ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলুর ব্যক্তিগত কর্মকর্তা কুতুব উদ্দিন আহমেদ দুর্নীতির এক মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেছেন।
Published : 08 Apr 2018, 03:24 PM
শ্বশুর ও আত্মীয়-স্বজনদের নামে অভিজাত এলাকা গুলশানে সরকারি ১০ কাঠা জমি ক্রয় দেখিয়ে কুতুব নিজেই বসবাস করে আসছিলেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান।
সেই মামলায় রোববার দুপুরে ঢাকার সেগুন বাগিচা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তারের কথা জানায় দুদক। বিকালে তাকে ঢাকার আদালতে তোলা হলে বিচারক কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
দুদকের উপ-পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম বাদী হয়ে রোববার সকালে গুলশান থানায় কুতুবের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় নাজমুল ইসলাম সাঈদ নামে আরেকজনকে আসামি করা হয়।
ওই মামলায়ই দুপুরে প্রশাসনিক কর্মকর্তা কুতুবকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, সরকারি কর্মকর্তা হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কুতুব গুলশানে রাজউকের অধিগ্রহণ করা সাড়ে ১৬ শতাংশ (১০ কাঠা) জমি শ্বশুর ও অন্যদের নামে ক্রয় দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন।
১৯৬৪ সালে গুলশান-বারিধারা আবাসিক মডেল টাউন সম্প্রসারণ প্রকল্পের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৩১ একর ১৪ শতাংশ জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরে এই জমি নিচু জলাশয় হওয়ায় রাজউকের জন্য অলাভজনক হবে বলে ১৯৬৯ সালে এই কার্যক্রম বন্ধ করা হয়।
এরপর রাজউক পুনরায় ওই ভূমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে এই নিয়ে দীর্ঘদিন মামলা চলে। এরপর ২০০৪ সালে উচ্চ আদালতের এক রায়ে ওই ভূমির ওপর রাজউকের মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে ধরা পড়ে, কুতুব ভূমি মন্ত্রণালয়ে কর্মরত থেকে প্রভাব বিস্তার করে কৌশলে এক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে রাজউকের সম্পত্তি অবমুক্ত করে নাজমুল ইসলাম সাইদকে জমির ভুয়া আমমোক্তার সাজিয়ে এবং শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধাসহ আরও দুজনকে ক্রেতা সাজিয়ে নিজেই ১০ কাঠা জমি আত্মসাৎ করেন।
“কুতুবউদ্দিন আহম্মেদের শ্বশুর আব্দুল জলিল মৃধার নামে ওই জমি ক্রয় করা হলেও তিনি কখনোই এই জমি ভোগদখল বা বসবাস করেননি। শুরু থেকেই কুতুবউদ্দিন আহম্মেদ এই জমি ভোগ দখল করে আসছেন এবং বর্তমানে এখানে সপরিবারে বসবাস করছেন।”
গ্রেপ্তারের পর কুতুবকে বিকালে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে আটক রাখার আবেদন করে দুদক। অন্যদিকে কুতুবের আইনজীবী করেন জামিনের আবেদন।
শুনানিতে আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুল কাইয়ুম বলেন, কুতুব ‘ষড়যন্ত্রের শিকার’।
দুদকের আইনজীবী মোহাম্মদ আবুল হাসান আসামি কুতুবকে ‘ভূমিদস্যু’ আখ্যায়িত করে বলেন, সরকারি এই কর্মকর্তা জামিন পেলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটাবেন।
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম এ কে এম মঈনউদ্দিন সিদ্দিকী জামিনের আবেদন নাকচ করে কুতুবকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।