দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা বলেছেন, বাংলাদেশের বিচার বিভাগ খুবই শক্তিশালী এবং নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছে।
Published : 09 Oct 2017, 09:17 PM
সোমবার সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে বাংলাদেশ-রাশিয়ার বিচার বিভাগের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে একথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ছুটি নেওয়ার পর তার দায়িত্ব পালন করছেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা।
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, বিচার বিভাগ আইনের শাসন সুরক্ষিত করতে সংগ্রাম করছে।
“সেই সংগ্রামের অংশ হিসেবেই আমাদের বিচার বিভাগ ভয় এবং পক্ষপাতের ঊর্ধ্বে উঠে বিচারকাজ পরিচালনা করছে।”
“থাইল্যান্ডের প্রধান বিচারপতি ভিরাপল থুংসুওয়ান বলেছেন যে একটি আদর্শ রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে সেদেশের নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও আইন প্রণয়ন বিভাগের ক্ষমতা পৃথককরণের একটি নীতি থাকতে হবে। সেখানে নীতি হবে এমন যে ভারসাম্য রক্ষায় একটি বিভাগ অপর দুটি বিভাগের ওপর খবরদারিত্ব করবে না।”
প্রত্যেকটি বিভাগের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া এবং পরস্পরের মধ্যে কার্যকর সহযোগিতা থাকার উপরও জোর দেন তিনি।
সমঝোতা স্মারকে নিজ নিজ পক্ষে সই করেন করেন রাশিয়ার প্রধান বিচারপতি ভায়াচেসলাভ এম লেভদেভ ও বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
এই সমঝোতার আওতায় দুই দেশের বিচার বিভাগ ই সেবা ও প্রযুক্তিগত নানা অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে, তৈরি করবে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র।
বিচার ও মামলা ব্যবস্থাপনায় ই-সার্ভিস প্রতিষ্ঠায় রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রাপ্তিও এ চুক্তির অন্যতম উদ্দেশ্য বলে জানান বিচারপতি ওয়াহহাব মিঞা।
তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাশিয়ার সঙ্গে যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সূচনা করে গেছেন, তা আরও উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রাশিয়ার অকুণ্ঠ সমর্থন ও সহযোগিতার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
রাশিয়ার প্রধান বিচারপতি বলেন, ৪৫ বছর ধরে দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। দিনে দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক আরও জোরদার হচ্ছে।
বিচারিক কাজে প্রযুক্তির ব্যবহার বিচারকাজ গণমুখী করে তুলবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
চুক্তি সইয়ের পর সুপ্রিম কোর্টের সামনে গাছ রোপণ করেন দুই প্রধান বিচারপতি। এরপর দোভাষীর মাধ্যমে প্রায় এক ঘণ্টা আপিল বিভাগের এজলাসে বসে বিচার কাজ দেখেন রুশ প্রধান বিচারপতি। এই সময়ের মধ্যে আপিল বিভাগ ৫-৬টি মামলা নিস্পত্তি করে।
এসময় রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে রাশিয়ার প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি।
রাশিয়ার প্রধান বিচারপতি পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে যান।
মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের বিচারকাজ দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রুশ প্রধান বিচারপতি।