সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণে হেফাজতে ইসলামের মতো সংগঠনগুলোর দাবির সঙ্গে সহমত জানালেও বাংলা নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান নিয়ে তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট আপত্তি জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Published : 12 Apr 2017, 05:19 PM
বর্ষবরণের অনুষ্ঠান নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার নিজের কার্যালয়ে নরসিংদী জেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যানের শপথ অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠানকে ‘অনৈসলামিক ও হিন্দুয়ানি’ আখ্যায়িত করে নিয়ে তা বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছে কয়েকটি কট্টর ইসলামী সংগঠন। বর্ষবরণের অনুষ্ঠান জঙ্গিহামলার শিকারও হয়েছে।
হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি সংগঠন বর্ষরণের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে স্থাপিত ভাস্কর্য অপসারণেও দাবিও জানিয়ে আসছিল।
মঙ্গলবার নিজের সরকারি বাড়িতে হেফাজত আমির শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে এক দল ওলামার সঙ্গে বৈঠকে শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন।
তবে একদিন বাদেই বর্ষবরণের অনুষ্ঠান নিয়ে হেফাজতের মতো সংগঠনগুলোর বক্তব্যকে বিভ্রান্তিকর বলে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পহেলা বৈশাখ বাঙালির নববর্ষ হিসেবে মুঘল আমল থেকেই পালন করা হচ্ছে। মঙ্গল শোভাযাত্রা মুঘল আমল থেকেই শুরু হয়। মঙ্গল কোনো হিন্দুয়ানি শব্দ না।”
বাংলা বছরের শেষ দিন চৈত্র সংক্রান্তিতে হালখাতা করার প্রচলনের কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, “বাংলা নববর্ষ উদযাপনের সাথে ধর্মের কোনো যোগ নেই। এটা আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। এটা যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। সকল ধর্মের মানুষ একসাথে বাংলা বছরের প্রথম দিন উদযাপন করে।”
“বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করে অনেকে। দেশবাসীকে সতর্ক থাকতে হবে,” শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে বলেন ইহসানুল করিম।
নববর্ষের সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বাংলা নববর্ষের এ অনুষ্ঠানকে সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন সংস্কৃতিমন্ত্রী।
চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ইউনেস্কো ‘নির্বস্তুক সাংস্কৃতিক’ ঐতিহ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে গত বছর।
প্রধানমন্ত্রী ইরানসহ বিভিন্ন দেশে নববর্ষ পালনের কথাও উল্লেখ করেন বলে জানান প্রেস সচিব।
তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এখানে ধর্মকে টেনে আনার কোনো যৌক্তিকতা নেই।”
মাছ রক্ষায় নববর্ষ উদযাপনে ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান আবারও জানান প্রধানমন্ত্রী।