প্রচার শুরু করতে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়ার সঙ্গে তাদের আইন ভাঙার বিষয়ে সতর্কও করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (এনসিসি) নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার।
Published : 05 Dec 2016, 06:42 PM
ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী বিধিমালা উপেক্ষা করে চলছে বলে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগের মধ্যে সোমবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে স্থাপিত রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই হুঁশিয়ারি দেন।
অভিযোগের বিষয়ে নুরুজ্জামান বলেন, “লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হচ্ছে প্রচারণার ক্ষেত্রে সমান সুযোগ, সেটি আইনে লেখায় আছে। এখন প্রশ্ন হলো, কেউ যদি আইন ভেঙে প্রচারণা বেশিই করেন, তাহলে উনি বেশি সুযোগ পাচ্ছেন, এটা বলা যাবে না।”
এর মাধ্যমে প্রার্থী ’শাস্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন’ মন্তব্য করে রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, “আমরা কনভিন্স করার চেষ্টা করছি। আমরা বলেছি, একজন প্রার্থী বেপরোয়া হতে পারে, আইন কিন্তু বেপরোয়া নয়। আইন প্রয়োগ করতে সময় লাগে।
“সে জন্য ধৈর্য ধরতে হবে। ২৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট যেহেতু ২৭টি ওয়ার্ডে আছে, আমার মনে হয় না যে আইনভঙ্গ করে কেউ পার পাবে।”
এই নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থী সাখাওয়াত হোসেন খান প্রতীক বরাদ্দ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “গত ৫/৭ দিন যাবত উনি (সেলিনা হায়াৎ আইভী) আচরণবিধির কোনো তোয়াক্কাই করছেন না। তিনি অহরহ আইন ভঙ্গ করলেও নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।”
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সেনা মোতায়েনের দাবিও জানিয়ে আসছেন বিএনপি প্রার্থী।
তবে পরিস্থিতি এখনও সেরকম নয় বলে মনে করছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা নুরুজ্জামান।
“যেহেতু নির্বাচনের পরিবেশটি অনিশ্চিত, ঠিক আজকে বলা যাবে না, এক সপ্তাহ পরে কী হবে,” সেই সঙ্গে যোগ করেন তিনি।
আগামী এক সপ্তাহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে তা ইসিকে জানাবেন বলে জানান তিনি। এরপর ৮ ডিসেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নারায়ণগঞ্জ সফরের পর ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় আইনশৃঙ্খলা সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি।
১৭৪টি ভোটকেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলার ব্যাখ্যাও দেন নুরুজ্জামান; যার ওই বক্তব্যকে বিএনপি সেনা মোতায়েনের দাবির পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, “আসলে ঝুকিপূর্ণ না, এটা গুরুত্বপূর্ণ। ভোটকেন্দ্র ম্যানেজমেন্টের যে ১০টি করণীয় বিষয় নজরে আনতে হয়, সেগুলো বিবেচনায় নিয়ে আমরা এটা নির্ধারণ করেছি। এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর মোতায়েনের ক্ষেত্রে সবগুলো ভোটকেন্দ্রে সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।”
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
“প্রত্যেকটি ভোটকেন্দ্রের ডিজাইন একই রকম হবে। যেদিক থেকে ভোটকেন্দ্রে ভোটার বা কেউ ঢুকতে চান, তারা কী জন্য ঢুকছেন, সেটা বলে যাবেন। ভোটার হলে স্লিপ দেখিয়ে প্রবেশ করবেন। অন্য কেউ ঢুকতে পারবেন না।”
প্রার্থীদের প্রচারের জন্য ক্যাম্প বা মাইক ব্যবহারের ক্ষেত্রে ‘পারমিশন লেটার’ ইস্যু করা হচ্ছে বলেও জানান নুরুজ্জামান।
“এর বাইরে কোথাও প্রচারণা চালানোর সুযোগ নেই। মাইক ব্যবহার করলে সেটা করা যাবে দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। এর বাইরে তারা চাইলে ভোটারদের কাছে যেতে পারবেন।”
ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত ১০ ডিসেম্বরের আইনশৃঙ্খলা সভায় হবে বলে জানান তিনি।
সোমবার সকালে থেকে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে ৭ মেয়র প্রার্থীসহ ২৭টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত মহিলা আসনে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
প্রতীক বরাদ্দের পর প্রার্থীদের সমর্থকরা উৎসবমুখর পরিবেশে প্রচার শুরু করেছেন।
বিকাল ৪টায় সিদ্ধিরগঞ্জের ৬ নং ওয়ার্ড থেকে আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করেন নৌকার প্রার্থী আইভী। ধানের শীষের প্রার্থী সাখাওয়াতের প্রচার শুরু হয় বন্দর থানার নবীগঞ্জ দরগা থেকে আসর নামাজের পরে।