চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সফরে ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে মনে করে বাংলাদেশ।
Published : 13 Oct 2016, 07:58 PM
তিন দশকের মধ্যে প্রথমকোনো চীনা প্রেসিডেন্টের সফরের আগের দিন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সামনে সরকারের এ অবস্থান তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী।
এই সফর ভারতের ওপর চাপ তৈরি করবে বলে এক চীনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত সম্পাদকীয়র পরিপ্রেক্ষিতে ওঠা প্রশ্নের জবাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা তা মনে করি না।”
শুক্রবার দুদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন শি জিনপিং।
এর আগে চীনের গ্লোবাল টাইমসের সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ঢাকার সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলে চাপে পড়ে নয়া দিল্লি দক্ষিণ এশিয়ায় তার কৌশল নিয়ে নতুন করে ভাবতে পারে এবং বেইজিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কও আরও উন্নত করতে আগ্রহী হতে পারে।
ওই সম্পাদকীয়তে লেখা হয়, ঢাকা-বেইজিং সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হলে তাতে ভারতের‘ঈর্ষান্বিত’ হওয়ার কিছু নেই এবং শি’র বাংলাদেশ সফরকে ‘নয়া দিল্লির আলিঙ্গন থেকে দক্ষিণ এশিয়ার একটি দেশকে কেড়ে নেওয়ার পদক্ষেপ’ হিসেবে দেখলে ভুল হবে।
এই সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৃহীত পররাষ্ট্র নীতিই অনুসরণ করছে বাংলাদেশ। সেটা হলো- ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়’।
এই সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, রেলওয়ে ও কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে বেশ কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে জানান তিনি।
প্রেসিডেন্টের এই সফরকে বেইজিংও ‘যুগান্তকারী’ অভিহিত করে বলেছে, তিনি চীনের ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ কাঠামোর আওতায় সহযোগিতা আরও একধাপ এগিয়ে নেবেন।
চীন ও ইউরেশিয়ার মধ্যে আঞ্চলিক ও আন্তঃআঞ্চলিক সংযোগের সমর্থক ‘ওয়ান-বেল্ট, ওয়ানরোড’ নামে এই উদ্যোগই চীনের অর্থনৈতিক কূটনীতির কেন্দ্রবস্তু।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাচীনা বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশা প্রকাশ করেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে নিবিড় সহযোগিতার নতুন যুগের সূচনা ঘটবে।
এছাড়া বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দক্ষিণ এশিয়া ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে একটি একক অর্থনৈতিক যোগাযোগ তৈরিতেও বাংলাদেশ কাজ করছে বলেও তিনি জানান।
সফরসূচি অনুযায়ী, শি জিনপিং শুক্রবার বেলা ১১টা ৪০মিনিটে ঢাকার বিমানবন্দরে নামবেন। সেখানে তাকে স্বাগত জানাবেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
দুই দিনের এই সফরে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ছাড়াও স্পিকার শিরিন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হবে।শুক্রবার বিকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে হবে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
পরে হোটেল লো মেরিডিয়ানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
শনিবার সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ভারতের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন চীনা প্রেসিডেন্ট।