হেঁটে এক এক করে হলি আর্টিজানে ঢুকেছিল জঙ্গিরা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিরা হেঁটে এক এক করে ঢুকেছিল বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 July 2016, 10:58 AM
Updated : 18 July 2016, 11:00 AM

ওই সময়কার একটি সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা ভিডিওতে তা দেখা গেছে বলে সোমবার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তিনি।

গত ১ জুলাই গুলশানের এই ক্যাফেতে জঙ্গিরা একটি মাইক্রোবাসে করে ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করেছিল বলে ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মী জানিয়েছিলেন।

সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “আমরা ভিডিওতে যা দেখেছি, এ সমস্ত যুবক দুজন-একজন করে হাঁটতে হাঁটতে (গুলশানের বেকারির) ভেতরে ঢুকেছে। ভিডিওতে এ লোকগুলোকে রাস্তায় হাঁটতে দেখেছি।

“আশপাশের ক্যামেরাগুলো একত্র করে যা দেখছি, এরা গাড়ি ব্যবহার করেনি। এরা হেঁটে হেঁটে আসছে, এরা দুজন একজন করে আসছে।”

কূটনীতিক পাড়া গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে বিদেশিদের কাছে জনপ্রিয় ওই ক্যাফেতে জঙ্গিরা ঢুকে অস্ত্রের মুখে সবাইকে জিম্মি করে। তাদের মোকাবেলায় গিয়ে নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর জঙ্গিরা ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে হত্যা করে।

প্রায় ১২ ঘণ্টা পর কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ওই রেস্তোরাঁর নিয়ন্ত্রণ নেয় সশস্ত্রবাহিনী। ওই অভিযানে ছয় হামলাকারী নিহত এবং একজনকে আটক করা হয় বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

গুলশানে নজিরবিহীন এই হামলায় জড়িতদের বেশিরভাগ উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান ছিলেন বলে তথ্য প্রকাশ হয়েছে। এই তরুণরা ঘরছাড়া ছিলেন বলে তাদের পরিবারগুলোর দাবি।

‘তথ্য ছিল; তবে কোথায়, তা ছিল না’

গুলশানে হামলার বিষয়ে গোয়েন্দাদের কাছে আগাম তথ্য ছিল বলে একদিন আগে দেওয়া বক্তব্য থেকে সরে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, হামলার আশঙ্কা গোয়েন্দারা করলেও স্থানের বিষয়ে স্পষ্ট ছিল না।

আসাদুজ্জামান কামাল রোববার বলেছিলেন, “আমাদের কাছে গোয়েন্দা রিপোর্ট ছিল যে একটা কিছু হতে যাচ্ছে, হতে পারে গুলশান এলাকায়। আমরা নানানভাবে তৈরি ছিলাম।”

আসাদুজ্জামান কামাল (ফাইল ছবি)

তার ওই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে গোয়েন্দা তথ্যের পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আগাম সতর্কতার ঘাটতি নিয়ে সমালোচনা উঠেছে। 

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোমবার বলেন, “তারা আশঙ্কা করছিল এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটতে পারে। কোথায় হবে, কখন হবে, কীভাবে হবে সেগুলো ছিল না।”

“এ ধরনের গোয়েন্দা তথ্য কিন্তু রোজই আসে। এ রকম হতে পারে, (হামলা) হবেই এ ধরনের তথ্য কিন্তু আসেনি।”

তবে গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার কারণেই পুলিশ সতর্ক ছিল দাবি করে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন, “খবর পাওয়ার পরপরই তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ সেখানে চলে গিয়েছিল। পুলিশ সব জায়গায় অবস্থান করছিল।”

আশঙ্কার খবর ‘খতিয়ে দেখা হচ্ছে’

বাংলাদেশে নির্দিষ্ট স্থানের নাম উল্লেখ করে আরও জঙ্গি হামলার যে আশঙ্কার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “তথ্য অনুযায়ী তো সমস্ত বাংলাদেশ আজকে তটস্থ হয়ে গেছে। স্যোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে যেভাবে প্রচারিত হচ্ছে এতে মানুষ আতঙ্কিত হচ্ছে।

“আমরা সব কিছুই আমলে নেই। আমরা যত ঘটনা, যত সংবাদ, যত তথ্য, ইচ্ছে করে বলুক আর উদ্দেশ্যমূলকভাবে বলুক, আমরা সব কিছু আমলে নেই, সব কিছু বিশ্লেষণ করি।”

জঙ্গি হামলা নিয়ে ফেইসবুকে যারা তথ্য দিচ্ছেন বিটিআরসি তা নজরদারি করছে কি না- এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “ফেইসবুকে যেসব তথ্য আসছে তা কোথা থেকে আসে তার সন্ধান করতে একটু সময় লাগে, সবগুলোই নজরদারিতে আছে, সবগুলোই দেখা হচ্ছে।”