বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী মিছিলে গিয়ে গুলিতে আহত আবদুল খালেককে হাতকড়া পরিয়েছে পুলিশ, যার দুই চাচা সেদিন গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন।
Published : 06 Apr 2016, 11:50 PM
এক মিছিলে দুই ভাইকে হারালেন বাঁশখালীর বদি
বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ে রক্তাক্ত বাঁশখালী
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসাপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজনকে বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে সোমবারের ঘটনায় পুলিশের দায়ের মামলায়।
সোমবার বিকালে বাঁশখালী উপজেলার গণ্ডামারা ইউনিয়নের বড়ঘোনা এলাকায় এস আলম গ্রুপের নির্মাণাধীন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতায় স্থানীয়রা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালে চারজন নিহত হন, আহত হন পুলিশসহ কমপক্ষে ১৯ জন।
এ ঘটনায় ছয় হাজার জনকে আসামি তিনটি মামলা হয়। একটি মামলা করে পুলিশ সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে।
বিদ্যুৎকেন্দ্রবিরোধী মিছিলে পাশাপাশি ছিলেন চরপাড়া গ্রামের তিন ভাই মরতুজা, আনোয়ার ও বদি আহমদ। চোখের সামনেই দুই ভাইকে মরতে দেখেছেন বদি; যার ছেলে আবদুল খালেক।
সংঘর্ষে গুলিতে আহত জহিরুল ইসলাম আছেন চমেক হাসাপাতালের ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে; খালেক ক্যাজুয়ালটিতে।
বুধবার পুলিশ তাদের হাতকড়া পরিয়ে দেয় সরকারি কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে করা মামলায়।
খালেকের বাবা বদি আহমদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলেকে হাতকড়া পরিয়ে দিয়েছে। সে নড়তে-চড়তে পারছে না।
“আহত হলো সে, সে বলে আসামি! এখন কী করব? কারে কী বলব?”
এ প্রসঙ্গে বাঁশখালী থানার ওসি স্বপন কুমার মজুমদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওরা মামলার আসামি। তাই তাদের হাতে হাতকড়া পরানো হয়েছে।”
গণ্ডামারা ইউনিয়নের পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকায় ৬০০ একর জমির উপর বেসরকারি ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য জমি নেওয়াকে কেন্দ্র করে গ্রামবাসী ক্ষুব্ধ ছিল। তবে একটি অংশ ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষে অবস্থান নিলে দুই পক্ষে উত্তেজনা দেখা দেয়।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরোধিতাকারীরা সোমবার ‘বসতভিটা রক্ষা কমিটি’র ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিলে অন্য পক্ষও পাল্টা সমাবেশ ডাকে। উত্তেজনা এড়াতে স্থানীয় প্রশাসন ১৪৪ ধারাও জারি।
সেদিনের সংঘর্ষে হতাহতদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, ভিটে ও পেশা হারানোর শঙ্কা থেকে তারা বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছিলেন।