আগারগাঁওয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্প অফিসে সাংবাদিক মারধরের তদন্ত প্রতিবেদন এলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এখনও।
Published : 28 Oct 2015, 11:11 PM
এতে জড়িতদের পার পাওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করে ক্ষোভ জানিয়েছে ভুক্তভোগী সংবাদকর্মীরা।
গত ১৯ অগাস্ট বেসরকারি টেলিভিশনের দুই সংবাদককর্মীকে পেশাগত দায়িত্বপালনের সময় মারধর করে এনআইডি প্রকল্পের কয়েকজন।
এ নিয়ে তদন্তে দুটি কমিটি গঠন হয়। গত ৭ অক্টোবর দ্বিতীয় তদন্ত কমিটিও প্রতিবেদন দিয়েছে ইসির কাছে।
এছাড়া সুনামগঞ্জের এক নির্বাচন কর্মকর্তাকেও এনআইডি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা মারধর করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক মাসেও সে বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সুনামগঞ্জের নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরে জড়িত প্রকল্পের তিন জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ দিয়েছে তদন্ত কমিটি।
“তাদের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধরের জন্য এনআইডি অফিসের আইডিইএ প্রকল্পের টেকনিক্যাল এক্সপার্ট ও জুনিয়র কনসালটেন্ট সুব্রত কুমার রাহুত, মমতাজুল হক ও সদস্য হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সাংবাদিক মারধরের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির দুটি প্রতিবেদনও হাতে এসেছে বলে জানান ইসির এ কর্মকর্তা।
“দুটো প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখব আমরা। একটু অপেক্ষা করেন। আমরা কী করি দেখেন,” বলেন সুলতানুজ্জামান।
তবে সাংবাদিক নির্যাতনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না,সে নিয়ে সংশয় রয়েছে ইসি কর্মকর্তাদের মধ্যেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হল। যখনই ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হল, তখনই অভিযুক্তরা দল পাকিয়ে এনআইডি অফিস অচল করে দিল। এখন তো মনে হয় দায়ীদের বাঁচানোর প্রচেষ্টা হচ্ছে।”
লাঞ্ছিত সাংবাদিকদের একজন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মনে তো হয় না কোনো বিচার হবে।”
সাংবাদিক লাঞ্ছনা ও মারধরের ঘটনায় আটজনের নাম সুনির্দিষ্ট করে উল্লেখ করেছিলেন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রতিবেদক জি এম মোস্তাফিজুল আলম ও ক্যামেরাপারসন রিপু আহমেদ।
ঘটনার পর নির্বাচন কমিশনের সংবাদ সংগ্রহে থাকা সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চার নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিবকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দায়ীদের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায়।
এনআইডি উইংয়ের তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িতদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এসেছিলেন ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ও প্রকল্পের মহাপরিচালক সুলতানুজ্জামান সালেহ উদ্দীন।
প্রকল্পের উপ পরিচালক ও এনআইডি পরিচালকের উপস্থিতিতে কর্মকর্তার কক্ষে এ ঘটনা ঘটায় তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার আগেই উপসচিব আব্দুল বারীকে প্রত্যাহারও করে নেওয়া হয়।
কিন্তু যারা সাংবাদিকদের সরাসরি মারধর করেছিলেন, তাদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে এনআইডি উইং। পরে ইসি সচিবালয় আলাদা তদন্ত কমিটিও করে।
এরইমধ্যে এনআইডি উইংয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান সৈয়দ আবু মুসা এবং ইসির তদন্ত কমিটির প্রধান উপ সচিব ফরহাদ আহম্মদ খান দুটো প্রতিবেদন জমা দেন। এতে ঘটনায় জড়িত কয়েকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেন।