বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মিয়ানমারের একটি ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ দলের গোলাগুলির পর সেখানে যৌথ অভিযান চালিয়েছে বিজিবি ও সেনাবাহিনী।
Published : 26 Aug 2015, 06:46 PM
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে থানচির বড় মোদক এলাকায় ওই গোলাগুলির সময় এক বিজিবি সদস্য আহত হন বলে বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানিয়েছেন।
বিজিবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠির সঙ্গে প্রায় ৫ ঘণ্টা থেমে থেমে গুলি বিনিময় চলে। যৌথ অভিযানের পর বিকালে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পিছু হটে।
বিজিবি প্রধান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষা বাহিনীকে তাদের সীমান্ত ‘বন্ধ করে দিতে’ অনুরোধ করেছেন তারা। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্তও তারা ঘিরে রেখেছেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আরাকানি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দমনে যৌথ অভিযান চলবে।”
বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবনে যাওয়ার কথা রয়েছে মন্ত্রীর।
থানচির রেমাক্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মালিরাম ত্রিপুরা জানান, মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী ওই দলটির নাম ‘আরাকান আর্মি’। বড় মোদক বিজিবি ক্যাম্পের কাছেই বুধবার সকালে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
বিজিবি সদস্যরা মঙ্গলবার আরাকান আর্মির মালামাল বহনের কাজে ব্যবহৃত ১০টি ঘোড়া আটক করে। এর জের ধরেই বুধবার সকালে আরাকান আর্মি এই হামলা চালায় বলে ধারণা করছেন বাহিনীর মহাপরিচালক।
বিজিবির ভাষ্য, ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী দলটি সকালে বিজিবির টহল দলের ওপর আক্রমণ করলে সীমান্তরক্ষা বাহিনীও জবাব দেয়। এ সময় বিজিবির নায়েক জাকির আহত হন।
পরে হেলিকপ্টারে করে ২টি সেনা ও একটি বিজিবি দল এবং পাশের একটি সেনা ক্যাম্প থেকে পৃথক একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। এছাড়া তাদের সহায়তার জন্য বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর এফ-৭ বিমান ওই এলাকায় প্রদক্ষিণের মাধ্যমে জোরাল প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়।
“এই জোরালো অবস্থান নেওয়ায় বিচ্ছিন্নতাবাদী সদস্যরা এলাকা ছেড়ে চলে যায়। বিকালে তারা পিছু হটে গেলে বিজিবি টহল দলের আক্রান্ত সদস্যরা নিরাপদে ক্যাম্পে ফেরত আসে,” বলা হয় বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
মেজর জেনারেল আজিজ বলেন, “ওই এলাকার পরিস্থিতি এখন শান্ত। বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মিয়ানমার কর্তৃপক্ষও এ ব্যাপারে কঠোর।”
হাতে গুলিবিদ্ধ বিজিবির নায়েক মো. জাকিরকে হেলিকপ্টারে করে চট্টগ্রাম সিএমএইচ-এ নেওয়া হয়েছে বলে জানান বাহিনীর মহাপরিচালক।
এ বিষয়ে বান্দরবান সেনা রিজিয়নের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নকীব আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।