“প্রশ্ন উঠলেও আমরা যেন কনফিডেন্টলি রিপ্লাই করতে পারি৷ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এটা”, বলেন তিনি।
Published : 30 Jun 2024, 04:56 PM
বিমানের আসন ফাঁকা থাকার পরেও যাত্রীদের টিকিট না পাওয়ার বিষয়টিকে ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ’ হিসেবে নিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) জাহিদুল ইসলাম ভূঞা। বলেছেন, এর সমাধান করতে চান তিনি।
রোববার দুপুরে বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে কথা বলছিলেন তিনি।
গত ২৯ মে দায়িত্ব গ্রহণের এক মাস পর এই আয়োজনে বিমানের আসন ফাঁকা থাকার পরেও যাত্রীদের টিকেট না পাওয়া বিষয়ে এক প্রশ্নের মুখে পড়েন জাহিদুল। জবাবে বলেন, “টিকেটিংয়ের যে সমস্যাটা, এটা আমি সম্পূর্ণভাবে সমাধান করতে চাই যেন এটি নিয়ে কোনো প্রশ্ন না ওঠে; প্রশ্ন উঠলেও আমরা যেন কনফিডেন্টলি রিপ্লাই করতে পারি৷ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এটা।”
এই সমস্যা সমাধানে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরে তিনি বলেন “আমাদের টিকেটিংয়ের জন্য সেভারের সঙ্গে যে মেকানিজমটা আছে, এটার অনেকগুলো ফিচার আছে, এটা আসলে রেডিই আছে, এটা পুরো মাত্রায় চালু করতে হবে। আর হচ্ছে মনিটরিং।”
আরও দুটি চ্যালেঞ্জ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের অন টাইম ফ্লাইট পরিচালনার পারফরম্যান্সের উন্নতি করা, আরেকটা হল, আমাদের এক্সপানশনের (সেবার আওতা বাড়ানো) যে প্ল্যানটা আছে, সেখানে আমরা মনে হয় একটু পিছিয়ে আছি। অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এই দুইটাকে বেশি ফোকাস করব।
“এই তিনটা চ্যালেঞ্জিং, বাট উইল পারসু।”
থার্ড টার্মিনালের গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বিমানের প্রস্তুতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এমডি বলেন, “বিমান প্রস্তত, বিমান এটি গত ৫২ বছর ধরে করছে। বিভিন্ন দেশের অধিকাংশ বিমানবন্দরে যারা ন্যাশনাল কেরিয়ার বা তাদের সিস্টার্স কনসার্ন, তারাই দায়িত্ব পালন করে। সেই হিসেবে আমরা আশাবাদী।”
নতুন রুটে ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে, মালে, কুমনিং, জাকার্তা, সিউল ও সিডনিতে আমরা পর্যায়ক্রমে ফ্লাইট চালু করার প্রত্যাশা করছি।”
তিনি বলেন, “আমরা দেখছি, ২০৩৫ সালের মধ্যে রুট সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বিমানের মোট ৪৭টি উড়োজাহাজের প্রয়োজন। বর্তমানে বিমান বহরের ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ৬টি ফেজ আউট (বহর থেকে বাদ যাবে) হবে। সেজন্য আরও ৩২টি উড়োজাহাজ পারচেজ অথবা লিজের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হবে।”
বিমানের লাভে থাকার হিসাব নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, সে বিষয়ে জাহিদুল বলেন “বিমানের প্রফিট-লস সিএ ফার্ম দিয়ে নির্ণয় করা হয়। এছাড়া পেট্রোবাংলার বিপিসিতে আমরা নিয়মিত পেমেন্ট করে যাচ্ছি। আর বকেয়া কমানোর প্রক্রিয়া অন গোয়িং আছে।”
অন্য এক প্রশ্নে বিমান এমডি জানান, গত অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি ২১টি উড়োজাহাজ (এয়ারক্রাফট) দিয়ে ৩২ লাখ যাত্রী পরিবহন করেছে এবং এই সময়ে সংস্থাটি ১০ হাজার কোটি টাকা আয়ের মাইলফলক অর্জন করেছে।
এ বছর আয় আরও বাড়বে– এমন আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “কার্গো থেকে ১২০০ কোটি আয়ের আশা করছি। গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিংয়ের আইএসও সাটিফিকেশন পেলে এটি বিশাল অর্জন হবে। বিভিন্ন বিভাগ থেকেই আমরা ভালো করছি।”
বিমানের ফ্লাইট বিলম্ব নিয়ে এক প্রশ্নে এমডি বলেন, “আমাদের অন-টাইম পারফর্মেন্স নরমালি ৭৪ পার্সেন্ট। গত মাসে সেটি ৬৭ শতাংশ ছিল। কীভাবে ডিলে কমানো যায়, সে বিষয়ে আমি পরিকল্পনা করছি।”
সম্প্রতি বিমানের এক কেবিন ক্রু সোনা চোরাচালান করতে গিয়ে আটক হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটা কখনই গ্রহণযোগ্য হবে না।”
দুর্নীতি করে কোনো প্রতিষ্ঠান আগাতে পারে না জানিয়ে জাহিদুল বলেন, “এখান কোনো সুযোগ নাই। এর আগে এখানে যারা দুর্নীতি করেছে, বিভিন্ন লেয়ারে তাদের শাস্তি হয়েছে।
“কাউকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, কাউকে পদাবনতি করা হয়েছে, কারও বেতন কমানো হয়েছে। আমিও এই জায়গাগুলোতে কাজ করব। আমরা টিকেটিংয়ের জায়গা ও দুর্নীতির জায়গা থেকে মুক্ত হতে চাই।”