এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না- এমন দাবি তুলে বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি ক্লাস বর্জন, অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি পালন করেন।
Published : 10 Mar 2025, 10:25 AM
পাঁচ দফা দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে প্রতীকী সনদ পোড়ানো কর্মসূচি দিয়েছে শিক্ষার্থী, ইন্টার্ন চিকিৎসক এবং চিকিৎসক পেশাজীবীদের ১৭ সংগঠন।
ওই কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল ১০টার দিকে থেকে গণস্বাক্ষর শুরু হয়েছে। আর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সনদ পোড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী।
তিনি সোমবার সকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চিকিৎসকদের বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল গণশুনানি হয়েছে। সেখানে এই কর্মসূচির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
“ম্যাটসের সার্টিফিকেট দিয়েই যদি চিকিৎসা দেওয়া যায়, তাহলে এমবিবিএস/বিডিএস পড়ার দরকার নাই। এমবিবিএস এবং বিডিএস না পড়ে কোর্টে রিট করার মাধ্যমেই ডাক্তার হওয়া যায়, সেই দেশে এমবিবিএস ও বিডিএস সার্টিফিকেটের কোনো প্রয়োজন নাই। এজন্য আমাদের এই কর্মসূচি।”
চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-
১. এমবিবিএস/বিডিএস ডিগ্রিধারী ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবি ব্যবহার করতে পারবে না। আদালতে চলমান এ সংক্রান্ত আইন ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী সব রিট মামলা আগামী ১২ই মার্চের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে এবং বাংলাদেশে ‘ডিপ্লোমা চিকিৎসক’ নামে বিভ্রান্তিকর কোনো পদবি প্রচলন করা যাবে না, যার অস্তিত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা বিশ্বের কোথাও নেই।
২. রেজিস্টার্ড চিকিৎসক (এমবিবিএস /বিডিএস) ছাড়া অন্য কেউ স্বাধীনভাবে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবে না- এ অবস্থান জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করতে হবে।
৩. আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট কোর্স কারিকুলাম সংস্কার কমিটি গঠন করে তাদের কোর্স কারিকুলাম পুনর্নির্ধারণ এবং মানহীন সকল ম্যাটস (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বন্ধে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করতে হবে।
৪. জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণের জন্য শূন্যপদে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক নিয়োগ এবং চিকিৎসকদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছরে উন্নীত করতে হবে।
৫. অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের জন্য সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো (পে-স্কেল) তৈরি করতে হবে।
মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (ম্যাটস) শিক্ষার্থীরা সরকারি/বেসরকারি পর্যায়ে নতুন পদ তৈরি, অবিলম্বে দশম গ্রেডে শূন্য পদে নিয়োগ, চার বছরের অ্যাকাডেমিক কোর্স বহাল রেখে কারিকুলাম সংশোধন ও ভাতাসহ এক বছরের ইন্টার্নশিপ, প্রস্তাবিত ‘অ্যালায়েড হেলথ প্রফেশনাল বোর্ড’ বাতিল করে ‘মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড অব বাংলাদেশ’ নামে বোর্ড গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও বিএমঅ্যান্ডডিসি স্বীকৃত ক্লিনিক্যাল বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার সুযোগের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, ম্যাটসদের অনেকগুলো দাবির একটা তাদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ লেখার বৈধতা দেওয়া। বিষয়টি নিয়ে আদালতে একটি রিট মামলা করা হয়েছে। ১২ মার্চ ওই মামলার শুনানি হবে।
এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ ‘ডাক্তার’ লিখতে পারবে না- এমন দাবি তুলে দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন। তাদের দাবিতে সংহতি প্রকাশ করে কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরাও। এবার তাদের সঙ্গে যোগ দিলে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা।