বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় সরকারি অর্থ বাড়ছে

কোনো মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য আরো বেশি অর্থের প্রয়োজন হলে, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই টাকাও দেওয়া হবে বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2023, 01:07 PM
Updated : 5 June 2023, 01:07 PM

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার জন্য বছরে সরকারি খরচ দুই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। 

কোনো মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য আরো বেশি অর্থের প্রয়োজন হলে, মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সেই টাকাও দেওয়া হবে বলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানিয়েছেন। 

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা দিতে সোমবার মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব খাজা মিয়া এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক পরে বলেন, “সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসার খরচ বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখন সরকারের সম্মতি নিয়ে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। আমাদের এখন আর্থিক সক্ষমতা আছে, এটি অচিরেই করা হবে। 

“মেডিকেল বোর্ড যদি মনে করে আরও টাকা লাগবে তাহলে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুসারে যত টাকা প্রয়োজন তত টাকাই ব্যয় করা যাবে।”

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দিতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে সরকারি হাট-বাজারসমূহের ইজারালব্ধ আয়ের ৪ শতাংশ অর্থ ব্যয় নীতিমালা’ জারি করা হয় ২০২২ সালে। 

ওই নীতিমালার আওতায় জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালসহ মেডিকেল কলেজ এবং ২৪টি বিশেষায়িত হাসপাতালে একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে বছরে বিনামূল্যে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা সেবা দেওয়া যায়। 

আর মুমূর্ষু রোগীর জরুরি অপারশেন ও চিকিৎসায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিবেচনা অনুযায়ী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালগুলো দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করতে পারে। এই ব্যয়ের পরিমাণ এক লাখ টাকা বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানান মন্ত্রী। 

মোজাম্মেল হক বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের এভাবে পাঁচ বছর ধরে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হলেও অনেকেই বিষয়টি ভালোমত জানেন না।

“কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধাই যাতে সেবাবঞ্চিত না হন। চিকিৎসকদের কাছে আবেদন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব তারা যেন দেখান।” 

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দেওয়া আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, “যে কোনো স্থান থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের যাচাই করা যাবে। মুক্তিযোদ্ধারা কার্ড নিয়ে গেলেই হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন। উপজেলা পর্যায়েও মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দেওয়া আছে।” 

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা পেতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদের চিকিৎসার বিষয়টি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে দেখা হবে।” 

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব খাজা মিয়া বলেন, “কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধার চিকিৎসা হচ্ছে না, রাষ্ট্র সেই দায় নিতে চায় না।”