নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে প্রার্থীদের আপিল আবেদনের ওপর যে শুনানি নির্বাচন কমিশনে চলছে, তাতে এই রায় এসেছে।
Published : 10 Dec 2023, 03:12 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাদ পড়া প্রার্থীদের মধ্যে থেকে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ২১ জন, যাদের মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থেই বেশি। আর আপিল আবেদন বাতিল হয়েছে ৬ জনের।
নির্বাচনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে প্রার্থীদের আপিল আবেদনের ওপর যে শুনানি নির্বাচন কমিশনে চলছে, তাতে এই রায় এসেছে।
প্রার্থীতা ফিরে পেয়েছেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের আবদুচ ছালামসহ আরও ১২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ থেকে একজন। জাতীয় পার্টি থেকে তিন জন।
এছাড়া তৃণমূল বিএনপির এক প্রার্থীর প্রার্থিতাও ফিরে এসেছে আপিলে। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির দুই প্রার্থীর পক্ষে রায় এসেছে ইসির। এবং বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট এবং জাকের পার্টির দুই প্রার্থী তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ইসির এই শুনানিতে।
রোববার সকাল ১০টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে শুনানি শুরু হয়; যা চলবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
এই ছয়দিন রোজ ১১০ জন করে প্রার্থীর আপিল শুনানি হবে ইসিতে।
এবারের সংসদ নির্বাচনে ২৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে দুই হাজার ৭১২ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাছাইয়ে বাদ পড়ে ৭৩১ জন প্রার্থীর মনোনয়ন। তার মধ্যে ৫৬১ জন প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার আবেদন করেন। শুনানি শেষে সঙ্গে সঙ্গে রায় প্রকাশ করবে ইসি। ওই রায়ে সন্তুষ্ট না হলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে প্রার্থীদের।
প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী যারা: চট্টগ্রাম-৮ আসনের প্রার্থী আবদুচ ছালাম, চট্টগ্রাম-২ আসনের মোহাম্মদ শাহজাহান, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের আব্দুল মোতালেব, ঢাকা-৫ আসনের মো. কামরুল হাসান, টাঙ্গাইল-২ আসনের ইউনুছ ইসলাম তালুকদার, যশোর-২ আসনের এস এম হাবিবুর রহমান, জামালপুর-২ মো . জিয়াউল হক জিয়া, ফরিদপুর-১ আসনের মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, মেহেরপুর-২ আসনের মোখলেছুর রহমান, বরগুনা-১ আসনের মো. খলিলুর রহমান এবং রংপুর-২ আসনের বিশ্বনাথ সরকার।
আওয়ামী লীগ: আওয়ামী লীগের মনোনীত কিশোরগঞ্জ-৩ আসনের মো. নাসিরুল ইসলাম খান আপিলে তার প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন।
জাপা: জাতীয় পার্টি থেকে বাদ পড়া তিনজনের পক্ষে রায় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া এই তিন প্রার্থী হলেন নোয়াখালী-২ আসনের তালেবুজ্জামান, খুলনা-৬ মো. শফিকুল ইসলাম মধু এবং কুমিল্লা-২ আসনের এটিএম মন্জুরুল ইসলাম।
ভোটের প্রার্থিতা নিয়ে ইসিতে ৫৬১ আপিল
এছাড়া তৃণমূল বিএনপির খুলনা-৪ আসনের শেখ হাবিবুর রহমান আপিলে তার মনোনয়ন ফিরে পেয়েছেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি থেকে ঢাকা-২০ আসনের মো. মিনহাজ উদ্দিন এবং মাদারীপুর-২ আসনের ইউসুফ আলী সুমনও তাদের মনোনয়ন ফিরে পান ইসির শুনানিতে।
আর বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী মুন্সিগঞ্জ-৩ আসন থেকে মমতাজ সুলতান আহমেদ এবং যশোর-৩ আসনের জাকের পার্টির মো. মহিদুল ইসলামের মনোনয়ন বৈধ বলে রায় দিয়েছে নির্বাচন কমিশনার।
আবেদন বাতিল হয়েছে যাদের
টাঙ্গাইল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী খন্দকার আহসান হাবিব, জামালপুর-২ আসনের জাকের পার্টির মো. আব্দুল হালিম মণ্ডল এবং যশোর-৫ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমানের আবেদন বাতিল হয়েছে ইসির শুনানিতে।
এছাড়া মুন্সিগঞ্জ-২ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহানা তাহমিনা, চট্টগ্রাম-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ ইমরান, ময়মনসিংহ-১০ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবুল হোসেনের আবেদনও বাতিল হয়।
প্রথমদিনের শুনানিতে অনুপস্থিত ছিলেন যশোর-১ আসনের জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. আক্তারুজ্জামান, টাঙ্গাইল-১ স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ, গোপালগঞ্জ-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কবির মিয়া, নেত্রকোনা-১ আসনের জাকের পার্টির প্রার্থী মো. ছমির উদ্দিন।
প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল দায়ের শেষ হয়েছে শনিবার। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর। এরপর চূড়ান্ত প্রার্থীর সংখ্যা জানা যাবে।
তারপর রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ করবেন ১৮ ডিসেম্বর। এরপর প্রচারে নামবেন প্রার্থীরা, যা চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।