বৃষ্টিপাতের এই সময়ে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে বজ্রপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
Published : 17 Apr 2025, 01:33 PM
বৈশাখের শুরুতেই রাজধানীসহ দেশের অন্যান্য বিভাগে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, সেই ধারা শুক্রবারও অব্যাহত থাকতে পারে। এরপর বৃষ্টিপাত কমে তাপমাত্রা বাড়ার আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা বৃহস্পতিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এখন তো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আগামীকালও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। রোববার বা সোমবারের দিকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে তাপমাত্রা বাড়তে পারে।"
বৃহস্পতিবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীতে আকাশ মেঘলা হয়ে বৃষ্টি ঝরতে শুরু করে। বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া মানুষ অস্বস্তিতে পড়লেও তাপপ্রবাহ থেকে স্বস্তি মিলেছে নগরজীবনে।
এর আগে বুধবার দুপুর থেকে ঢাকায় শুরু হয় ঝুম বৃষ্টি, যা থেমে থেমে চলছিল সন্ধ্যা পর্যন্ত। গেল ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত নথিবদ্ধ করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আবহাওয়ার ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
বৃষ্টি হলেও সারাদেশে দিনে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
সাধারণত ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে সেটি হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে অতিভারি বৃষ্টিপাত ধরা হয়।
গেল ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে দেশের সর্বোচ্চ ৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া, রংপুরে ৫৮ মিলিমিটার, নরসিংদীতে ৩৯ মিলিমিটারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কম-বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সিলেটে, ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল রংপুরে; ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বজ্রপাত নিয়ে সতর্কতা
বৃষ্টিপাতের এই সময়ে দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে বজ্রপাত হতে পারে বলে সতর্ক করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক স্বাক্ষরিত এক সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, নওয়াবগঞ্জ, রাজশাহী, নওগাঁ, জয়পুরহাট, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ঢাকা, নরসিংদী, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিল্লা, ভোলা, বরগুনা, নোয়াখালী, সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার এবং হবিগঞ্জে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বজ্রসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।
বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে কিছু পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এগুলো হল—
>> আকাশে মেঘের গর্জনের সময় ভেতরে অবস্থান করা।
>> ঘরের দরজা, জানালা বন্ধ রাখা।
>> এই সময়ে সম্ভব হলে ভ্রমণ বন্ধ রাখা।
>> বাইরে থাকলেও নিরাপদ আশ্রয়ে ঢুকে যাওয়া।
>> গাছের নিচে আশ্রয় না নেওয়া।
>> কংক্রিটের মেঝেতে শুয়ে না পড়া, বা লেপ্টে না থাকা।
>> ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর চার্জে না দেওয়া এবং সংযোগ খুলে রাখা।
>> জলাশয় বা লেকে থাকলে দ্রুত উঠে আসা।
>> বিদ্যুৎ পরিবাহী বস্তু থেকে দূরে থাকা।
>> ঝড়ের সময় বাইরে না যাওয়া।