হাজারো নতুন বইয়ে জমজমাট বইমেলা

সাধারণত মেলা পরিচালনা কমিটি থেকে ‘মানসম্পন্ন’ বই খোঁজার জন্য একটি উপকমিটি করে দেওয়া হয়। মেলার সমাপনী দিন তাদের তথ্য থেকে মেলা কমিটি জানায়, কতটি বই ‘মানসম্মন্ন’।

পাভেল রহমানবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2024, 05:59 PM
Updated : 26 Feb 2024, 05:59 PM

প্রতিবারই মেলায় আসে হাজারো নতুন বই; এর মধ্যে ‘মানসম্পন্ন’ বই ‍খুঁজে পাওয়ার প্রক্রিয়াটি সহজ নয়।

সাধরণত মেলা পরিচালনা কমিটি থেকে ‘মানসম্পন্ন’ বই খোঁজার জন্য একটি উপকমিটি করে দেওয়া হয়। মেলার সমাপনী দিন তাদের তথ্য থেকে মেলা কমিটি জানায়, কতটি বই ‘মানসম্মন্ন’।

অবশ্য গত বছর মানসম্পন্ন বইয়ের তালিকা প্রকাশ্যে আনেনি মেলা পরিচালনা কমিটি। এবার সেই তালিকা প্রকাশ করা হবে কিনা জানতে চাইলে মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এটা এখনই বলা সম্ভব নয়। মেলার সমাপনী আয়োজনে এ বিষয়ে জানানো হবে।”

মেলা পরিচালনা কমিটির জনসংযোগ বিভাগ জানিয়েছে, সোমবার পর্যন্ত মেলার তথ্যকেন্দ্রে জমা পড়েছে ৩ হাজার ৮১টি নতুন বই। বিভিন্ন স্টলে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, এর বাইরেও আরও অনেক নতুন বই রয়েছে, যেগুলো জমা তথ্যকেন্দ্রে পড়েনি।

বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলের বিক্রয়কর্মী, লেখক, প্রকাশক এবং বই সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার মেলায় অন্তত ৫ শতাধিক নতুন বই নানাভাবে পাঠকের মাঝে আলোচিত হচ্ছে।

বইপ্রেমীরা বিভিন্ন প্রকাশনী বা লেখকদের ফেইসবুকে দেওয়া বিজ্ঞাপন এবং নানা উৎস থেকে নতুন বইয়ের তথ্য জানছেন এবং সেখান থেকে নিজেরা তালিকা তৈরি করে কিনছেন পছন্দের বই। 

এসব বইয়ের মধ্যে ভাষা আন্দোলন নিয়ে গবেষণাধর্মী বই যেমন আছে, আবার উপন্যাস, গল্পগ্রন্থ, কবিতা, সিনেমা, নাটকের বইও আছে। অনুবাদগ্রন্থও রয়েছে পাঠকের তালিকায়।

গোটা দশেক স্টলের বিক্রয়কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সাহিত্যের বইয়ের মধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে উপন্যাস, থ্রিলার, অনুবাদ ও গল্পগ্রন্থ।

বাতিঘরের স্বত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "রাজনৈতিক বইয়ের বেশ চাহিদা আছে। এর বাইরে উপন্যাস ভালো বিক্রি হয়। গল্প, কবিতার বইয়ের বিক্রি একটু কম। প্রবন্ধ, অনুবাদগ্রন্থেরও চাহিদা ভালো।"

মেলার জনসংযোগ বিভাগ বলছে, সংখ্যার দিক থেকে এবার সবচেয়ে বেশি এসেছে কবিতার বই।

রোববার পর্যন্ত আসা নতুন বইয়ের মধ্যে গল্পগ্রন্থ ৩৮৯টি, উপন্যাস ৪২৩টি, প্রবন্ধ ১৫৯টি, কবিতা ৯০৫টি, গবেষণাগ্রন্থ ৬০টি, ছড়া ৮৩টি, শিশুতোষ ৫৪টি, জীবনীগ্রন্থ ১০৭টি, রচনাবলী ২৬টি, মুক্তিযুদ্ধ ৫৬টি, নাটক ২৪টি, বিজ্ঞান ৩৫টি, ভ্রমণ ৫১টি, ইতিহাস ৪৫টি, রাজনীতি ২২টি, স্বাস্থ্য ২১টি, বঙ্গবন্ধু বিষয়ক ২৩টি, রম্য/ধাঁধা ২৪টি, ধর্মীয় ৫২টি, অনুবাদ ৫০টি, অভিধান ১৮টি, সায়েন্স ফিকশন ৩২টি এবং অন্যান্য ১৭৬টি। 

ভাষা আন্দোলন নিয়ে বই

বাতিঘর এনেছে বদরুদ্দীন উমরের লেখা 'আমাদের ভাষার লড়াই'। এ বইয়ে মূলত শিশু-কিশোরদের উপযোগী করে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখা হয়েছে।

অন্যদিকে বাংলা একাডেমি এনেছে 'বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’। গবেষণাধর্মী এ বইয়ে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে।

অন্যপ্রকাশ এনেছে ড. এম আবদুল আলীমের গবেষণাধর্মী বই ‘ভাষা আন্দোলনে কংগ্রেস’। ‘প্রাণের মিনার শহীদ মিনার’ নামে মুহম্মদ নূরুল হুদার লেখা একটি বই প্রকাশ করেছে এডুসেন্ট্রিক।

ঐতিহ্য ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও স্মৃতিকেন্দ্রিক পাঁচটি বই প্রকাশ করেছে। যার মধ্যে আছে- ভাষা আন্দোলনের বীর শহীদ আবুল বরকতের পরিবারের সদস্য, বন্ধু ও স্বজনের সাক্ষাৎকার-ভিত্তিক জীবনী 'ভাষশহিদ আবুল বরকত: নেপথ্যকথা'। বইটির প্রণেতা পশ্চিমবঙ্গের গবেষক বদরুদ্দোজা হারুন। 

প্রয়াত কবি বেলাল চৌধুরীর অমর একুশ বিষয়ক স্মৃতি ও ভাবনার সংকলন 'একুশের স্মৃতি ও ভাবনা' এবং  আনোয়ারা সৈয়দ হকের সম্পাদনায় 'একুশের ২১ গল্প'ও প্রকাশ করেছে ঐতিহ্য।

ভাষা আন্দোলনের দুই অগ্রসৈনিক শহীদ মুনীর চৌধুরীর 'দুষ্প্রাপ্য রচনা' এবং জহির রায়হানের 'আত্মকথা ও অন্যান্য রচনা' নামেও দুটি বই এনেছে ঐতিহ্য। এ দুটি গ্রন্থের সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন কাজী জাহিদুল হক।

হরেক বই

রাজু আলাউদ্দিনের তিনটি বই এসেছে এবারের মেলায়। জলধি এনেছে কবিতার বই ‘কামে ও প্রণয়ে এ জীবন’ এবং নির্বাচিত বিদেশি প্রেমের কবিতার অনুবাদগ্রন্থ ‘স্বদেশী ভাষায় বিদেশী প্রেম’। পাঠক সমাবেশ এনেছে ‘মার্কেসযাপন ও কলম্বিয়া ভ্রমণ’। বইটিতে মার্কেসের অনুবাদ যেমন সংকলিত হয়েছে, তেমনই এ লেখককে নিয়ে কয়েকটি আলোচনা রয়েছে।

বাতিঘর এনেছে আবুল আহসান চৌধুরী সম্পাদিত ‘অবিদ্যার অন্তঃপুরে নিষিদ্ধ পল্লীর অন্তরঙ্গ কথকতা’। দিব্যপ্রকাশ এনেছে ‘ঢাকার বাঈজি- শিশির সমতটী’। শ্রাবণ প্রকাশনী প্রকাশ করেছে আফরোজা জামিল কংকার 'আমার বাবা শহীদ কর্নেল জামিল'।

প্রথমা এনেছে আনিসুল হকের উপন্যাস ‘কখনো আমার মাকে’, আসিফ নজরুলের উপন্যাস ‘আমি আবুবকর’। পাঠক সমাবেশ প্রকাশ করেছে আহমাদ মোস্তফা কামালের উপন্যাস ‘জলের অক্ষরে লেখা’। নবান্ন প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে জয়দুল হোসেনের ছড়াসমগ্র।

মাছরাঙা প্রকাশন এনেছে শুভাশিস সিনহার কবিতার বই ‘কাহার বাতাস আসি লাগে’। পাঠক সমাবেশ প্রকাশ করেছে স্বকৃত নোমানের ‘ইহযৌবন’ ও ‘বাংলায় ইসলাম: সহজিয়া ও রক্ষণশীল ধারা’। মোজাফফর হোসেনের ‘আদিপাপের পরের পাপ’ এনেছে পাঠক সমাবেশ। আজব প্রকাশ এনেছে ‘সঞ্জীবনামা’।

বাদল সৈয়দের দুটি বই এসেছে মেলায়, যার মধ্যে কিশোর থ্রিলার ‘মৃথিবী’ এনেছে ‘প্র’ এবং উপন্যাস ‘জলে ডোবা সূর্যাস্ত’ এনেছে বাতিঘর। দুয়ার প্রকাশনী এনেছে এহসান মাহমুদের 'কোকিল অসময়ে ডাকিয়াছিল' এবং আদর্শ এনেছে 'স্বাধীনতা গণতন্ত্র মানবাধিকার'।

এছাড়া এসেছে- ‘প্লাবনভূমির মহাকাব্য- মহিউদ্দিন আহমদ (প্রথমা), একদলীয় সরকার যেভাবে এলো- মহিউদ্দিন আহমদ (গ্রন্থিক), রুমি এবং নারী- পুলিন বকসী  (গ্রন্থিক),  গঙখাঙ রেগেখ্যঙ- মহিবুল আজিজ (চন্দ্রবিন্দু), মুক্তিযুদ্ধে সালদা নদী মন্দবাগ ও কসবা সাবসেক্টর- মোস্তফা হোসেইন (আনন প্রকাশন), লোপা ও লিলিথ- লোপা মমতাজ (সংবেদ), মেঘের ওপারে আকাশ- হালিমা খাতুন ( বাংলা একাডেমি), আপন ছায়া-আবুল হাসানের অগ্রন্থিত গদ্য ( ঐতিহ্য), বিদ্যাসাগর-দুইশ বছর পূর্তি স্মারকগ্রন্থ (বেঙ্গল), তালাকের কাহিনী ও অন্যান্য- মুনীর চৌধুরী (প্রথমা), সুফিয়া কামালের প্রিয় রান্না (সাঈদা কামাল)।

রবীন্দ্রনাথ: এক দুঃখী রাজপুত্রের গল্প- মনজুরে মওলা ( কাকাতুয়া), হাসান আজিজুল হক রচনাবলি (ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ), পৃথিবীর সংক্ষিপ্ত ইতিহাস (বাতিঘর), খন্দকার ফজলে রাব্বীর ‘বাঙালী মুসলমানের অতীত’ (খড়িমাটি), নিঝুম মজুমদারের ‘মোশতাকের মন’ (শব্দশৈলী), দ্রাবিড় সৈকতের ‘বাঙলার চিত্রকলা’ (পাঠক সমাবেশ), সুহান রিজওয়ানের ‘মুখোশের দিন বৃষ্টির রাত’, মুম রহমানের ‘মানুষরতন’ (বেঙ্গল বুকস), মোহিত কামালের ‘পরানচুল্লি’ (বিদ্যাপ্রকাশ) আছে নতুন বইয়ের তালিকায়।

অনুবাদ-ভাষান্তরে বৈচিত্র্য

কবি শাহেদ কায়েসের ভূমিকা ও ভাষান্তরে এসেছে মাহমুদ দারবিশের ‘মুক্তিকামী মানুষের কবিতা’। বইটি প্রকাশ করেছে ‘বৈভব’। প্রথমা এনেছে জাভেদ হুসেনের ‘মির্জা গালিবের সঙ্গে’ এবং চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন এনেছে মির্জা গালিবের ‘গুল-এ-নগমা’। ভাষান্তর করেছেন নির্ঝর নৈঃশব্দ্য।

চৈতন্য এনেছে ব্রিটেনে প্রথম বসতি স্থাপনকারী সিলেটিদের গল্প ‘সাত সমুদ্র তেরো নদীর ওপারে’। ক্যারোলাইন অ্যাডামস সম্পাদিত Acroos Seven Seas and Thirteen Rivers বইয়ের অনুবাদ এটি। অনুবাদ করেছেন আমিরুল হক বাবলু।

জার্নিম্যান বুকস এনেছে উর্দু, হিন্দি, সিন্ধি, তামিল, ইংরেজি, পাঞ্জাবি, মারাঠি, কানাড়ি ও মালয়ালাম ভাষায় লেখা দেশভাগের গল্পের চারটি আলাদা অনুবাদ বই। গল্পগুলো অনুবাদ করেছেন জাভেদ ইকবাল ও মোস্তফা আজিজ জয়। একই প্রকাশনী সাবেরা তাবাসসুমের অনুবাদে প্রকাশ করেছে ‘মীনা কুমারীর শায়েরি’।

পাঠক সমাবেশ এনেছে আর্জেন্টিনার কথাসাহিত্যিক আদলফো কাসারেসের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ‘মোরেলের উদ্ভাবন’। স্প্যানিশ থেকে বইটি অনুবাদ করেছেন আনিসুজ জামান।

ঐতিহ্য সর্বোচ্চসংখ্যক অনুবাদ গ্রন্থ প্রকাশ করেছে। শুধু এ মেলাতেই তারা এনেছে ২৯টি অনূদিত বই। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেসের দুটি বই—‘মৃত্যুর কড়া নাড়া’ আর ‘গোত্রপিতার হেমন্ত’। অনুবাদ করেছেন যথাক্রমে বেলাল চৌধুরী ও অদিতি ফাল্গুনী।

অবসর প্রকাশন এনেছে সাতোশি ইয়াগিসাওয়ার ‘মরিসাকি বইঘরের দিনগুলি’। বইটি অনুবাদ করেছেন সালমান হক। ইউপিএল এনেছে হাসিবা আলী বর্ণার অনূদিত এশিয়ার নারী সাধকদের জীবন ও কবিতার বই ‘গহিনের স্রোতধারা’। আলম খোরশেদের অনুবাদে কাগজ প্রকাশ করেছে অনূদিত সাক্ষাৎকার সংকলন ‘কথা-সরিৎসাগর’।

পার্বত্য চট্টগ্রামে এক ব্রিটিশ কর্মকর্তার রোমাঞ্চকর অভিযান নিয়ে টমাস হারবার্ট লুইনের লেখা ‘থাংলিয়ানা’ এনেছে কথাপ্রকাশ। অনুবাদ হারুন রশীদের। কথাপ্রকাশ আরও এনেছে দিলওয়ার হাসানের অনুবাদে সাদাত হাসান মান্টোর গল্প ‘শিকারি আওরাত’। সংবেদ প্রকাশ করেছে মাসুমুল আলমের অনুবাদে ফিলিস্তিনি লেখক ঘাসসান কানাফানির ‘মেন ইন দ্য সান’।

ক্যান্সারজয়ীদের বয়ান এবং সংবিধান প্রণেতাদের নিয়ে বই

৪২ জন ক্যান্সার লড়াকুর বয়ান নিয়ে সেন্টার ফর ক্যান্সার কেয়ার ফাউন্ডেশন প্রকাশ করেছে ‘এখানে থেমো না’। মেলায় বইটির পরিবেশক ইউপিএল। জীবনের শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও থেমে না যাওয়ার বার্তা ছড়িয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে বইটিতে।


আমীন আল রশীদের লেখা 'সংবিধান প্রণেতাগণ' নামে একটি বই প্রকাশ করেছে শিলালিপি প্রকাশনী। স্বাধীন বাংলাদেশে ৩৪ জন সংবিধান প্রণেতার মধ্যে ১২ জনকে নিয়ে এবার মেলায় এসেছে বইটির প্রথম খণ্ড। আগামী মেলায় বাকিদের নিয়ে বইটির দ্বিতীয় খণ্ড প্রকাশ হবে।

আমীন আল রশীদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এই বইটি প্রকাশ হওয়ার আগে ১২ পর্বে আমার সিরিজ লেখা প্রকাশ করেছে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম। এবার বই আকারে এসেছে।”

সিনেমা ও নাটকের বই

কথাপ্রকাশ এনেছে আ-আল মামুনের ‘সিনেমার সাংস্কৃতিক রাজনীতি’ এবং বেলায়াত হোসেন মামুনের লেখা চলচ্চিত্র বিষয়ক প্রবন্ধের বই ‘সিনেমা সিনথেসিস’। এছাড়া ঐতিহ্য এনেছে রুদ্র আরিফের গ্রন্থনা ও অনুবাদে ‘সিনেঅলা ৪’।

নাটকের বইয়ের মধ্যে ঐতিহ্য এনেছে ভারতীর নাটক ‘অন্ধযুগ- ধর্মবীর’। সংহতি এনেছে সামিনা লুৎফা নিত্রার সম্পাদনায় ‘বটতলা'র নাটক: পথে নেটে সচেতনতায়নে’। অয়ন পাবলিকেশন এনেছে আবু সাঈদ তুলুর ‘নাট্যসমালোচনার কথকতা’। সব্যসাচী থেকে এসেছে তোসাদ্দেক হোসাইন মান্নার ‘হাফ ডজন পথনাটক'। ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ এনেছে অপূর্ব কুমার কুন্ডুর নাটক ‘হোমার’।

বইমেলা সোমবার ছিল ২৬তম দিন। মেলা শুরু হয় বেলা ১২টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।

মেলা পরিচালনা কমিটির জনসংযোগ বিভাগ জানায়, এদিন নতুন বই এসেছে ২৪৬টি।

লেখক বলছি, অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন প্রাবন্ধিক সরকার আবদুল মান্নান, কবি ইউসুফ রেজা, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক দিলওয়ার হাসান এবং কথাসাহিত্যিক মোস্তফা তারিকুল আহসান। 

'বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন' মঞ্চে বিকেল ৫টায় সাম্প্রতিক বাংলা কবিতা বিষয়ে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন- সঞ্জীব পুরোহিত, তারেক রেজা, জাহিদ সোহাগ, আফরোজা সোমা, আহমেদ শিপলু, রাদ আহমদ এবং সৈয়দ জাহিদ হাসান। সঞ্চালনা করেন ফারহান ইশরাক ও খালিদ মারুফ।     

মূল মঞ্চ 

বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে হয় ‘স্মরণ: আবুবকর সিদ্দিক’ এবং ‘স্মরণ: আজিজুর রহমান আজিজ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে ফরিদ আহমদ দুলাল এবং কামরুল ইসলাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মামুন মুস্তাফা, তৌহিদুল ইসলাম, মো. মনজুরুর রহমান এবং আনিস মুহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কবি আসাদ মান্নান। 

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মুহাম্মদ সামাদ, শামীম রেজা, রহীম শাহ, নভেরা হোসেন এবং ইমরান পরশ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী ম ম জুয়েল, আরিফ হাসান, আলম আরা জুঁই, খোদেজা বেগম। 

এছাড়া ছিল জয়দুল হোসেনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সাহিত্য একাডেমি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া’, মুশতাক আহমেদ লিটনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আমরা কুঁড়ি’ এবং শাহিনুর আল-আমীনের পরিচালনায় সংগঠন ‘সম্প্রীতি সংস্কৃতি বন্ধন’-এর পরিবেশনা। 

সংগীত পরিবেশন করেন মোস্তাক আহমেদ, বাউল আব্দুর রহমান, মো. আরিফুর রহমান, আইয়ুব মোহাম্মদ খান, ফারহানা শিরিন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. আলী হোসাইন, মীর তারিকুল ইসলাম, সঞ্জয় কুমার দাস, ঈষিতা বড়ুয়া, মো. শাহীনুর ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন স্বপন কুমার দাস (তবলা), ডালিম কুমার বয়া (কী-বোর্ড), মো. হাসান আলী (বাঁশী) এবং অজিত কুমার (দোতারা)। 

মঙ্গলবার যা থাকবে 

মঙ্গলবার বইমেলার ২৭তম দিন। মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে হবে ‘স্মরণ: সেলিম আল দীন’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন লুৎফর রহমান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন রশীদ হারুন এবং জাহিদ রিপন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন নাট্যজন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ।