Published : 04 May 2025, 07:27 PM
চট্টগ্রামে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) হয়ে কাজ করা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুই মার্কিন নাগরিককে ভারতের মিজোরাম থেকে আটক করার খবর দিয়েছে দেশটির একাধিক সংবাদমাধ্যম।
শুক্রবার মিজোরামের রাজধানী আইজলের লেংপুই বিমানবন্দর থেকে তাদের আটক করা হয়।
জ্যেষ্ঠ এক সরকারি কর্মকর্তার বরাতে দ্য হিন্দু বলছে, আটকের পরের দিন দুজনকে দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়। তারা বম সম্প্রদায়ের একটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে মিজোরামে গিয়েছিলেন।
মিজোরাম সরকারের ‘শীর্ষস্থানীয় সূত্রের’ বরাতে আরেক ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, আটক ব্যক্তিদের পরিকল্পনা ছিল নাথান বমসহ কেএনএফ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা।
দ্য হিন্দু বলছে, ভ্রমণ ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রের চার নাগরিক ২ মে আইজল পৌঁছাবেন- এমন খবর দেশটির গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে আগে থেকেই ছিল। চারজনের মধ্যে দুজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের সন্দেহ, চট্টগ্রামে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সূচনাকালে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত দুজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
শনিবার দেশটির এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল থেকে পালিয়ে আসা বম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন সদস্য ২০২২ সালের পর থেকে মিজোরামে আশ্রয় নেন।
গতবছর এপ্রিলে বান্দরবানে দুটি ব্যাংক ডাকাতির পর সেনাবাহিনী পাহাড়ে কুকি-চিন ন্যাশনাল আর্মির (কেনএনএ) বিরুদ্ধে অভিযানে নামলে তারা মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া শুরু করেন বলে ওই কর্মকর্তার দাবি।
হিন্দু লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এসব নাগরিক ‘টিয়ারফান্ড’ নামের একটি সংস্থায় যুক্ত, যারা ৫০টির বেশি দেশের স্থানীয় গির্জা এবং খ্রিষ্টান সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে।
চিন, কুকি-জো এবং বমরা নৃতাত্ত্বিকভাবে মিজোরামের প্রভাবশালী মিজো সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত।
“সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশাধিকার (পিএপি) না থাকায় আটকের পর ওই পুরুষ ও নারীকে দিল্লিতে ফেরত পাঠানো হয়,” বলেন ওই কর্মকর্তা।
প্রায় ১৪ বছর পর ২০২৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও মিজোরামকে নতুন করে ‘প্রটেক্টেড এরিয়া রেজিম’ ঘোষণা করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মূলত এসব অঞ্চলে বিদেশিদের গতিবিধিতে নজরদারি চালাতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশিকা অনুযায়ী, ‘অতি জরুরি কারণ ছাড়া’ এসব অঞ্চল ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
ওই সরকারি কর্মকর্তা বলেন, আটক হওয়া দুজন চট্টগ্রাম অঞ্চলে বিভিন্ন বেরসরকারি সংস্থার হয়ে কাজ করেছেন। তারা কী উদ্দেশ্যে মিজোরাম সফরে এসেছিলেন, তা নিয়ে ‘সন্দেহ’ তৈরি হয়েছে।
গত মাসের শুরুতে মিজোরারেম মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা ইঙ্গিত দেন, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করা পশ্চিমাদের ভাড়াটে যোদ্ধারা মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে তার রাজ্যকে পথ হিসেবে ব্যবহার করতে পারে।
মুখ্যমন্ত্রীর এমন আশঙ্কার পর গত ২১ এপ্রিল লেংপুই বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্সের (সিআইএসএফ) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এনডিটিভি বলছে, আটক দুজনের নাম শেকুন (Chekun) ও সরণ (Saron)।
তবে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম আটক ব্যক্তিদের পরিচয় কিংবা তাদের বাংলাদেশি জাতীয়তার তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।