টিউলিপ সিদ্দিকী দেশে না এলে কী হবে জানতে চাইলে দুদক কমিশনার আজিজী বলেন, “আদালতে বিচার চলবে।”
Published : 23 Apr 2025, 07:17 PM
অর্থ পাচারকারীদের শনাক্ত করা খুব কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী।
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, “পাচারকারীরা হচ্ছে শয়তানের মত। শয়তান শিরা-উপশিরায় যায়, তাকে দেখা যায় না। শয়তানের কর্মকাণ্ডে দুর্ভোগ মানুষ ভোগ করে। পাচারকারীদের জন্য আমরা দুর্ভোগ ভোগ করছি। পাচারকারীকে যদি আমার কোনো না কোনোভাবে ধরতে পারি, ছাড় দেব না।”
ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যেগুলো অনুসন্ধান চলছে সেগুলো আমার কাছে আজ পর্যন্ত আসেনি। যেগুলো চার্জশিট হওয়ার সেগুলো অনেক আগে হয়ে গেছে।”
ঢাকার পূর্বাচলে প্লট ও রূপপুর প্রকল্পে ‘অনিয়মের’ অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নি ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিককে তিন দফা নোটিস দিয়েও সাড়া পায়নি দুদক।
টিউলিপের ঢাকার দুটি ঠিকানায় মাস দুয়েকের মধ্যে পাঠানো এসব নোটিসের ‘রেজিস্ট্রি’ চিঠি প্রতিবারই কেউ গ্রহণ না করায় ফেরত আসার তথ্য বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে দিয়েছেন তদন্ত সংস্থা দুদকের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা।
ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকীর গণমাধ্যমে দেওয়া মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি জানান, “সেটার ইতিমধ্যে জবাব দেওয়া হয়েছে। কমিশনের পক্ষ থেকে এর জবাব দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যান এর জবাব দিয়েছেন। জবাব হল, বাংলাদেশের আদালতে এসে তিনি নিজেকে ডিফেন্ড করবেন।”
কোনো কারণে তিনি না আসলে কী হবে জানতে চাইলে দুদক কমিশনার আজিজী বলেন, “আদালতে বিচার চলবে।”
দুদকের পক্ষ থেকে টিউলিপ সিদ্দিকীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কেন যোগাযোগ করা হবে না? আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ কীভাবে করব, তার নির্ধারিত ঠিকানাতে নোটিস পাঠানো হয়েছে। কেউ রিসিভ করেছে কি না এটা জানি না। দুদক বিচার প্রক্রিয়া কোর্টে দিয়ে দিবে, কোর্ট বিচার করবে।”
অর্থপাচার রোধে দুদকের টাস্ক ফোর্সের কাজের অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিবিড়ভাবে যোগাযোগ চলছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে চেয়ারম্যান নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। দুদকের একার পক্ষে অর্থ ফেরত আনা সম্ভব নয়, আন্তর্জাতিক অনেক সংস্থা এর সঙ্গে যুক্ত। বিভিন্ন এজেন্সির সাথে আমরা যোগাযোগ করছি।”
“অনেক মামলায় আদালতে চলে গেছে এ নিয়ে জন্য এটি নিয়ে মন্তব্য করতে পারব না। আর পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে যত ধরনের যত ধরনের আইনি প্রক্রিয়া আছে সবগুলোই আমরা গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেওয়া হবে না।”
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে দুদকের মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বুধবার বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
শ্রমিক-কর্মচারীদের লভ্যাংশের ২৫ কোটি ২২ লাখ টাকা আত্মসাৎ এবং ওই অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা করে দুদক। মামলার বাকি আসামিরাও ছিলেন গ্রামীণ টেলিকমের কর্মকর্তা-কর্মচারী।
প্রধান উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল হওয়া প্রসঙ্গে মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেন, “আদালতে স্বাধীনতা আছে। আদালত বিচার করবেন, রায় দিবেন। সেই রায়ে যারা সংক্ষুব্ধ হবেন, তারা আপিল করবেন।”
দুদকের নিজস্ব কর্মকর্তাদের দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমাদের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কোনো স্মেল যদি পাই, তাহলে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না। আগে আমরা ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশনে যাচ্ছি, ডেফিনেটলি তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।''