“আবেদনে বাদী তার মামলার এজাহারে জেড আই খান পান্নাকে ভুলবশত আসামি করেছেন উল্লেখ করে তার নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।’’
Published : 21 Oct 2024, 03:41 PM
হত্যাচেষ্টার মামলা থেকে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী জেড আই খান পান্নার নাম বাদ দিতে আবেদন করেছেন বাদী মো. বাকের।
তিনি বলেছেন, তার মামলায় এই জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে ‘অজ্ঞতা ও ভুলবশত’ আসামি করা হয়েছে।
খিলগাঁও থানার ওসি মো. দাউদ হোসেন বলেছেন, সোমবার এই আবেদন করেছেন বাদী বাকের।
ওসি দাউদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, "বাদী বাকের সাহেব আমার কাছে একটি আবেদন করেছেন। আবেদনে তার মামলার এজাহারে জেড আই খান পান্নাকে ভুলবশত আসামি করেছেন উল্লেখ করে তার নাম প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নিতে বলেছেন।
“আমি আবেদনটি গ্রহণ করেছি, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
খিলগাঁও থানার ওই আবেদনে বাকের বলেন, “এজাহারের ৯৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না (৬৫) কে অজ্ঞতা ও ভুলবশত আসামি করা হয়। ৯৪ নং ক্রমিকে বর্ণিত ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে মামলাটি তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করিতে মর্জি হয়।'”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত জুলাই মাসে আহাদুল ইসলাম নামে এক তরুণ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় ‘হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করেন তার বাবা বাকের।
ঢাকার খিলগাঁও থানায় করা ওই মামলায় ৯৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে বর্ষীয়ান আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে।
এই মামলায় সোমবার সকালে হাই কোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী।
শুনানি শেষে আদালত ভবন থেকে বের হয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পান্না সাংবাদিকদের বলেন, “আমি এমন কোনো কাজ করি নাই যাতে এই ধরনের একটা মামলা করা হবে। যদি রাজনৈতিক মামলা হত আমার আপত্তি ছিল না, জীবনে আমি বহুত মামলা খাইছি। একটা হত্যা প্রচেষ্টা এবং মেরাদিয়া কোথায় আমি জানিও না, যাইওনি।”
হত্যাচেষ্টার মামলায় আসামি আইনজীবী জেড আই পান্না, আসকের নিন্দা
জেড আই খান পান্নার আইনজীবী আহসানুল করিম বলেন, শুনানিতে আদালত থেকে কোনো মন্তব্য করা হয়নি এবং রাষ্ট্রপক্ষও জামিন আবেদনের বিষয়ে কোনো আপত্তি করেনি।
“তার (জেড আই খান পান্না) বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে সেটা তাকে হ্যারাস করার জন্যই করা হয়েছে। আমি মনে করি না এখানে রাষ্ট্র বা যারা ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত, তাদের কোনো প্রভাব আছে।”
কোনো ‘অতি উৎসাহী’ ব্যক্তি এই মামলাটি করিয়েছেন বলে মনে করছেন এহসানুল করিম।
মামলায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিজিবি মহাপরিচালক মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকীসহ ১৮০ জনের নাম রয়েছে আসামির তালিকায়।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই খিলগাঁওয়ের মেরাদিয়া বাজারের পশ্চিমে শুক্কুর আলী গার্মেন্টস মোড়ে ছাত্রজনতার আন্দোলনে অংশ নেন বাদী মো. বাকেরের ছেলে মো. আহাদুল ইসলাম।
“এ সময় পুলিশ, বিজিবি, র্যাবসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন এবং ১৪ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ ককটেল ও সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটান এবং গুলিও চালান।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য হত্যার উদ্দেশ্যে এ গুলি চালানো হয়’ অভিযোগ করে এজাহারে বলা হয়, “সেখানে আহাদুল ইসলাম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে রাস্তায় পড়ে যান। সন্ত্রাসীরা তাকে পরে আরও লাঠিপেটা করেন। পরে তাকে কাছের একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।”