ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় দানা বৃহস্পতিবার উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
Published : 23 Oct 2024, 11:07 AM
পূর্বমধ্য বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি আরো ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।
বুধবার সকাল ৬টায় গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয় বলে আবহাওয়ার এক বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে।
সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এ অঞ্চলের ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে 'দানা'। এটা কাতারের দেওয়া নাম, যার অর্থ অতি সুন্দর ও মূল্যবান মুক্তা।
আবহাওয়ার বিশেষ বুলেটিনে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দানা বুধবার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৬৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পূর্বে অবস্থান করছিল।
সে সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ঘন্টায় ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছাকাছি এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দানা আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে হতে আরো ঘণীভূত হতে পারে।
ক্রমাগত শক্তি সঞ্চয় করে এই ঘূর্ণিবায়ুর চক্র বুধবার রাতে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে বলে আভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া অফিস।
তাদের বিশেষ বুলেটিনে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় দানা বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় দুপুর থেকে সন্ধ্যার মধ্যে ভারতের পুরি ও সাগর দ্বীপের মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে উত্তর ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল অতিক্রম করতে পারে। তখন বাতাসের গতি থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস বলছে, বুধবার রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এ সময় সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় কেবল কক্সবাজারে ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া দেশের অন্য কোথাও বৃষ্টি হয়নি।
সবশেষ গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ বাংলাদেশ উপকূল ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানে। ওই ঝড়ের তাণ্ডবে বাংলাদেশ ও ভারতে মোট ৭৬ জনের মৃত্যু হয়।