ওই ভবনে কেউ প্রবেশ করতে বা বের হতে পারছেন না।
Published : 05 Mar 2025, 03:17 PM
চলতি বছরের মে মাসে অনুষ্ঠেয় ফাইনাল পেশাগত এমবিবিএস পরীক্ষা মার্চে এগিয়ে আনার দাবিতে ঢাকার বিজয় নগরে বিক্ষোভ করছেন অকৃতকার্য এবং অনিয়মিত মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
এ দাবিতে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) অবরোধ করে রেখেছেন তারা। এতে ওই ভবনে কেউ প্রবেশ করতে বা বের হতে পারছেন না।
বিএমডিসির রেজিস্ট্রার চিকিৎসক মো. লিয়াকত আলী বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে কয়েকশ শিক্ষার্থী ভবনের প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়েছেন। এতে বিএমডিসিসহ ওই ভবনের তিনটি অফিসের লোকজন বিপাকে পড়েছেন।"
ওই ভবনে কেবল বিএমডিসির অফিস নয়, নার্সিং কাউন্সিলসহ তিনটি অফিস আছে জানিয়ে লিয়াকত আলী বলেন, “এখানে অনেকে জরুরি কাজে আসেন। তারা কাউকে বেরুতে দিচ্ছে না, আসতেও দিচ্ছে না।"
আন্দোলনরতরা জানিয়েছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত ২০১৮-২০১৯ সেশনের ফাইনাল প্রফেশনাল সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষা আয়োজনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি করছেন তারা।কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া আন্দোলনকারীরা বলেছেন, ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের জন্য আলাদা পরীক্ষা নেওয়ার কথা। কিন্তু বিএমডিসি নিচ্ছে না। মে মাসে ২০১৯-২০২০ ব্যাচের সঙ্গে তাদের পরীক্ষা নিতে চাচ্ছে।
আনন্দ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “আমাদের পরের ব্যাচকে আমাদের আগে আনতে চাচ্ছে। আর আমাদের সময় পিছিয়ে দিতে চাচ্ছে। দুই ব্যাচের পরীক্ষা একসঙ্গে নিতে চাচ্ছে যেখানে নিয়ম অনুযায়ী আমরা আলাদা একটা পরীক্ষা পাই। আলাদা পরীক্ষা আমার ন্যায্য দাবী।”
দুই ব্যাচের পরীক্ষা একসঙ্গে নিলে কী কী সমস্যা কি হতে পারে জানতে চাইলে আনন্দ বলেন, “আমি তো আলাদা একটা পরীক্ষা পাই। সেটা একসঙ্গে হবে কেন? আমাদের যদি এখন আরও দুইমাস পিছিয়ে দেয় তাহলে এমডি, এমএস, এফসিপিএস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারব না। আমরা অলরেডি দেড় বছর পিছিয়ে গেছি, মে মাসে পরীক্ষা নিলে আরও পিছিয়ে যাব।”
বিক্ষোভরতরা বিএমডিসি কর্তৃপক্ষের কারো সঙ্গেও এখন পর্যন্ত কথা বলেননি বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার চিকিৎসক লিয়াকত আলী।
তিনি বলেছেন, গত বছরের নভেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে পারেনি এমন এক হাজারের মত শিক্ষার্থী আছে। মে মাসে পরীক্ষার যে সূচি হয়, সেখানেও অনুত্তীর্ণদের অংশ নেওয়ার সুযোগ আছে।
“এটাই হলো নিয়ম, এর বাইরে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তারা চাচ্ছে একটা মধ্যবর্তী পরীক্ষা, কিন্তু এটা সম্পূর্ণ আইন বহির্ভূত একটা কাজ। পরীক্ষা কিভাবে নেবে, রুটিন কি হবে সেটা ঠিক করে ডিন অফিস। শিক্ষার্থীরা দাবি করছে তাদের টাইমমত পরীক্ষা নিতে হবে নইলে তারা পিছিয়ে যাবে। একটা সহজ বিষয়কে বিএমডিসির ওপর চাপিয়ে জটিলতা তৈরি করা হয়েছে।”
বিভিন্ন মেডিকেল কলেজের ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষের ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের নভেম্বর মাসে। ওই পরীক্ষায় প্রায় এক হাজারের মত পরীক্ষার্থী এক বা একাধিক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হন।
পাঠ্যক্রম অনুযায়ী তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষা আগামী মাসে মাসে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তবে শিক্ষার্থীরা তা এগিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছে।
বিষয়টি নিয়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের ডিন অধ্যাপক চিকিৎসক মো. মোস্তাক আহমেদের সঙ্গে বৈঠক হয়।
ওই সভার কার্যপত্রে বলা হয়েছে, বিএমডিসির কারিকুলাম অনুযায়ী বছরে দুইবার মে এবং নভেম্বর মাসে পরীক্ষা নেওয়ার নিয়ম। এ অবস্থায় ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসের পরীক্ষায় অকৃতকার্য ও অনিয়মিত মেডিকেল শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা মার্চ মাসে নেওয়ার সুযোগ নেই। পরীক্ষা নিলে তা হবে বিএমডিসির কারিকুলামের পরিপন্থা। কারিকুলাম অনুযায়ী পরবর্তী পরীক্ষা আগামী মে মাসে অনুষ্ঠিত হবে।