কাচ্চি ভাই ছাড়াও গুলশানের ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁকে ৪০ হাজার এবং সোনারগাঁও জেনারেল স্টোরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
Published : 06 Mar 2024, 12:54 PM
‘অগ্নিঝুঁকি’ নিয়ে দোকান চালানোর অভিযোগে রাজধানীর গুলশানের বিরিয়ানির দোকান কাচ্চি ভাইয়ের একটি শাখাকে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়া গুলশানের ধানসিঁড়ি রেস্তোরাঁকে ৪০ হাজার এবং সোনারগাঁও জেনারেল স্টোর নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার ঢাকার গুলশান ও বনানী এলাকায় ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন ও মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে অভিযানে নামে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। তাতে যোগ দেয় ফায়ার সার্ভিস।
অভিযানের শুরুতে গুলশান ২ নম্বর সার্কেলের হোসেন ভবনে যায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। পাঁচতলা ওই ভবনে ‘কাচ্চি ভাই’সহ রেস্তোরাঁর সংখ্যা আটটি।
‘কাচ্চি ভাইয়ে’ গিয়ে কাগজপত্র দেখতে চাইলে দায়িত্বরত কর্মচারীরা ভ্রাম্যমাণ আদালতকে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কিছু দেখাতে পারেনি বলে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জুলকার নায়ন জানান।
বিরিয়ানির ওই দোকানে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না জানিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট নায়ন বলেন, "তারা ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া আর কোনো বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি। তাদের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা নেই, কোনো ফায়ার এক্সিট নেই। এ কারণে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আবার পরবর্তী অভিযানে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে অসঙ্গতি পাওয়া গেলে সিলগালা করে দেওয়া হবে।"
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নায়ন বলেন, গুলশান ও আশপাশের এলাকার রেস্তোরাঁগুলোর অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সার্বিক বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে অভিযানে।
“গুলশানের সাততলা ‘সেবা হাউজ’ ভবনের নিচতলায় মালামাল রাখায় সোনারগাঁও জেনারেল স্টোরকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি আমরা। মালমালগুলো সোনারগাঁও স্টোরের। এছাড়া অপ্রতুল অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও রেস্তোরাঁর কিচেনের পরিবেশ ভালো না থাকায় ধানসিঁড়িকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।“
বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজে অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির পর ঢাকার বিভিন্ন এলাকার রেস্তোরাঁয় অভিযান চালাচ্ছে রাজউক, সিটি করপোরেশন, পুলিশ ও র্যাব। গেল বৃহস্পতিবার গ্রিন কোজিতে ‘কাচ্চি ভাই’ দোকানের একটি শাখাও আগুনে পুড়েছে। দিনটি সপ্তাহিক ছুটির আগের রাত হওয়া সেখানে ভিড়ও ছিল অন্যান্য দিনের চাইতে বেশি।
ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডের পর ধানমণ্ডি, খিলগাঁও, মিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় একই রকম অনিরাপদ পরিবেশে ভবনজুড়ে রেস্তোরাঁ গড়ে তোলার বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় আসে। এই প্রেক্ষাপটে সমালোচনার মুখে রোববার থেকে রাজধানীতে অভিযানে নেমেছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা।
আবাসিক ভবনে নিয়মের বাইরে গিয়ে বানানো রোস্তোরাঁগুলো বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে এসব অভিযানে, আবার কোনো কোনো জায়গায় গ্রেপ্তার ও জরিমানাও করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার বেইলি রোডে দিনভর অভিযান চালিয়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউক। ওই অভিযানে ‘নবাবী ভোজ’সহ ওই সড়কের ছয়টি রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেওয়া হয়। চারটি রেস্তোরাঁকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে এবং এছাড়া সতর্ক করা হয়েছে আরও ৩০টি রেস্তোরাঁকে।
এছাড়া, খিলগাঁওয়ে সোমবার দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের অভিযানে ‘অগ্নিঝুঁকিতে’ থাকা ‘নাইটিঙ্গেল স্কাইভিউ’ নামে একটি বহুতল ভবন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সোমবার ঢাকার সাত মসজিদ সড়কের গাউসিয়া টুইন পিক ভবনে অভিযান চালিয়ে সব রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেয় রাজউক। ওইদিনই আর বাণিজ্যিক অফিস করার অনুমোদন নিয়ে অবৈধভাবে রেস্তোরাঁ চালানোয় জিগাতলার কেয়ারি ক্রিসেন্ট টাওয়ার বন্ধ করে দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
টানা অভিযানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকার রেস্তোরাঁ বন্ধ করে রেখেছে মালিক কর্তৃপক্ষ। এসব দোকানের হটলাইন নম্বরে ফোন দিয়েও সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।