ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুল হক আগামী ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ রেখেছেন।
Published : 09 Sep 2024, 01:13 PM
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে আরো এক মাস সময় পেল তদন্ত সংস্থা র্যাব।
ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মো. মাহবুবুল হক আগামী ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নতুন তারিখ রেখেছেন।
আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ছিল এদিন। কিন্তু র্যাব প্রতিবেদন না দেওয়ায় বিচারক সময় পিছিয়ে দেন।
মামলাটিতে এ নিয়ে ১১১ বারের মত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাল।
র্যাবের কাছে আলোচিত এই তদন্তভার আসার পর তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়েছে ৬ বার। বর্তমানে মামলাটির তদন্ত করছেন অষ্টম তদন্ত কর্মকর্তা র্যাব সদর দপ্তরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন ভূইয়া।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মামলার নির্ধারিত তারিখ ছিল কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া না পর্যন্ত আদালতের নিয়ম অনুযায়ী এক মাস সময় দিয়ে নতুন তারিখ দিতে থাকবেন বিচারক।”
কবে নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন দিতে পারবেন প্রশ্ন করা হলে কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ না জানিয়ে এই তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন তদন্ত ‘চলমান আছে’।
যা ঘটেছিল
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন বেসরকারি টিভি চ্যানেল মাছরাঙার বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনি।
সেই রাতে সেই ফ্ল্যাটে তাদের দুজনের সঙ্গে ছিল তাদের একমাত্র সন্তান পাঁচ বছর বয়সী মাহির সরওয়ার মেঘ। তাকে উদ্ধৃত করে পুলিশ তখন জানিয়েছিল, খুনি ছিল দুজন।
আলোড়ন সৃষ্টি করা ওই হত্যাকাণ্ডের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপর বছরের পর বছর গড়ালেও হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের পর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন রুনির ভাই নওশের রোমান। বিভিন্ন সময়ে মোট আটজনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরে দুজন জামিনও পান।
তারা হলেন- রুনির বন্ধু তানভীর রহমান, বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবির, রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু ওরফে মাসুম মিন্টু, কামরুল হাসান অরুন, পলাশ রুদ্র পাল, তানভীর ও আবু সাঈদ।
প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ আলোচিত এ হত্যা মামলার তদন্তে নামে। চারদিন পর তদন্তের ভার দেওয়া হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে।
তারা রহস্যের কিনারা করতে না পারায় হাই কোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল তদন্তভার র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
দায়িত্ব পেয়ে ডিএনএসহ অন্যান্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার জন্য ঘটনাস্থল থেকে বটি, পরিধেয় কাপড়সহ বেশ কিছু বস্তু পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ল্যাবেও পাঠায় র্যাব। কিন্তু এতদিনেও তার ফল প্রকাশ করা হয়নি।
তদন্ত প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতা নিহত সাংবাদিক দম্পতির পরিবার এবং পেশাজীবীদের মধ্যে হতাশা ও উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এই মামলার দ্রুত ন্যায়বিচার পাওয়ার দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এর আগে বিভিন্ন সময় সাবেক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এই হত্যাকাণ্ডের কূলকিনারা করার আশা দিলেও সুফল মেলেনি।
শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার পতন হলে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এই হত্যার বিচারের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, এই বিচার করা না হলে তারা জাতির কাছে দায়ী থাকবেন।