পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে উভয় প্রতিবেশীর সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ”আমরা অতীতে যেমন দেখেছি এবং ভবিষ্যতেও তেমনই দেখতে চাই।”
Published : 09 Dec 2024, 07:37 PM
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে ভারত ‘গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি’ প্রত্যাশা করে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি।
সোমবার বিকালে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারতের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার আগ্রহের কথা তুলে ধরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, “সাম্প্রতিক কিছু বিষয় ও ঘটনাবলী নিয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনার সুযোগ হয়েছিল। আমি সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে ভারত সরকারের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছি।
“আমরা সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলার মত দুঃখজনক কিছু ঘটনা নিয়েও আলোচনা করেছি। আমরা এসব বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে সার্বিকভাবে গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাশা করি।”
ভারত দুই দেশের সম্পর্ককে একটা ইতিবাচক ও গঠনমূলক অভিমুখে নিয়ে যেতে চায় বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠকে ঢাকায় আসা বিক্রম মিশ্রি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে এটাই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক, যা ‘ফরেন অফিস কনসালটেশন’ (এফওসি) নামে পরিচিত। সর্বশেষ বৈঠক হয় ২০২৩ সালের নভেম্বরে, দিল্লিতে।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে ব্রিফিংয়ে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ”আমাদের মধ্যে অত্যন্ত খোলামেলা ও গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। আমি জোর দিয়ে বলেছি, ভারত সব সময় বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক এবং পরস্পরের জন্য সুবিধাজনক সম্পর্ক চায়।
“আমরা দুই দেশের জনকেন্দ্রিক ও জনমুখী সম্পর্ক অতীতে দেখেছি এবং ভবিষ্যতেও এর ধারাবাহিকতা দেখব।”
দুই দেশের সম্পর্কের কেন্দ্রে থাকবে সব মানুষের কল্যাণ মন্তব্য করে তিনি বলেন, এটি নিত্যদিনের উন্নয়ন প্রকল্পে (যা বাংলাদেশে বাস্তবায়ন হচ্ছে) প্রতিফলিত হচ্ছে এবং সামনেও প্রতিফলন হবে।
সকালে একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় পৌঁছান বিক্রম মিশ্রি। এরপর বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেন তিনি। সেখান থেকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে দেখা করতে তিনি যান মন্ত্রণালয়ে।
ব্রিফিংয়ে বিক্রম মিশ্রি বলেন, “বৈঠকে বাণিজ্য, অর্থনীতি, যোগাযোগব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, পানি, জ্বালানি, উন্নয়ন সহযোগিতা, কনস্যুলার সহযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতাসহ দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
“দ্বিপক্ষীয় এ সম্পর্ক অব্যাহত না রাখার কোনো কারণ এখানে নেই। এ সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে আমি আজ জোর দিয়ে বলেছি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে ভারত ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে চায়।”