সাড়ে ২২ হাজার ফুট উঁচু এই শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বুধবার ভোর ৬টায় যাত্রা করবেন নেপাল-বাংলাদেশের আট অভিযাত্রী।
Published : 12 Oct 2022, 12:27 AM
বাংলাদেশ ও নেপালের কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রথমবারের মত ‘দোগারি হিমাল’ শৃঙ্গে দুই দেশের পতাকা ওড়ানোর অভিযানে প্রস্তুত আট পর্বতারোহী।
সাড়ে ২২ হাজার ফুট উঁচু এই শৃঙ্গ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে বুধবার ভোর ৬টায় থামেল থেকে পোখারার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন নেপাল-বাংলাদেশের এই যৌথ অভিযাত্রী দলের সদস্যরা।
এ অভিযানে বাংলাদেশ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুবারের এভারেস্টজয়ী এম এ মুহিত। বাকি তিন সদস্যের মধ্যে বাহলুল মজনু ও ইকরামুল হাসান একটি ৭০০০ মিটার উচ্চতার চূড়াসহ হিমালয়ের একাধিক পর্বতে আরোহণ করেছেন। আর রিয়াসাদ সানভী ভারতে পর্বতারোহণ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে নেপালে পর্বত আরোহণে অংশ নিয়েছেন।
আর চার সদস্যের নেপাল দলে থাকছেন নিমা নুরু শেরপা, তামটিং শেরপা, আংডু শেরপা ও কিলি পেম্বা শেরপা।
বাংলাদেশ দলের সদস্য সানভী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, মঙ্গলবার সকালে তারা নেপালের ডিপার্টমেন্ট অব ট্যুরিজমে গিয়েছিলেন, সেখানে সব কাগজপত্রের কাজ সারা হয়েছে।
“এখন এ অভিযানের আনুষ্ঠানিক নাম, বাংলাদেশ নেপাল ফ্রেন্ডশিপ এক্সপিডিশন। এখানে টুরিজম ডিপার্টমেন্টের যে পরিচালক, তিনি এ অভিযানের সাফল্য কামনা করে বলেছেন, অভিযান সফল হলে বড় করে উদযাপন হবে।”
তবে নেপালের আবহাওয়া এখনও অন্যবছরের চেয়ে কিছুটা খারাপ। সে কারণে কাঠমাণ্ডু থেকে যাত্রা কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে বলে জানালেন সানভী।
‘দোগারি হিমাল’ জয়ে বাংলাদেশ-নেপাল যৌথ অভিযান
তিনি বলেন, “আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য পোখারা। সেখানে আমরা একরাত থাকব। তারপর চলে যাব এমন জায়গায়, যেখান থেকে আমাদের পায়ে হেঁটে বেজক্যাম্পের উদ্দেশে যাত্রা শুরু হবে।”
দোগারি হিমালে এর আগে কোনো অভিযান হয়নি, ফলে দুই দেশের অভিযাত্রীদের সামনে অনিশ্চয়তায় ভরা সম্পূর্ণ অচেনা এক পথ।
সানভী বলেন, “আমরা জানি না সামনে কী হবে, কারণ এবারের আবহাওয়া খুবই খারাপ। চারপাশে আমরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ল্যান্ডস্লাইডের কথা শুনছি। তবে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।”
ভারতের নেহেরু মাউন্টেনিয়ারিং ইন্সটিটিউটে বেসিক মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করেছিলেন সানভী। গত ৪ অক্টোবর ওই ইন্সটিটিউটের ৩৩ জনের একটি দল অ্যাডভান্স মাউন্টেনিয়ারিং কোর্স করার সময় বরফ ধসের কবলে পড়ে। ওই দলের ৩৩ জনের মধ্যে ২৯ জনের লাশ পাওয়া গেছে, বাকিরা এখনো নিখোঁজ।
পেশায় সাংবাদিক সানভী বলেন, “পোখারার পরে আমাদের যে গন্তব্য, সেটা আসলে কতদূর, সেখান থেকে প্রতিদিন কয় ঘণ্টার রাস্তা হাঁটতে হবে, সেটাও আমরা বলতে পারছি না। গিয়ে আসলে দেখতে হবে। আগে থেকেই বলা সম্ভব না আমরা কীভাবে যাবে, কতক্ষণে যাব, কবে পৌঁছাব, কবে পর্বতারোহণ করব; অনেককিছু এর সাথে জড়িত। এটা অন্যান্য সাধারণ অভিযানের মত না।”
দোগারি হিমালের যাত্রা কেন হিমালয়ের অন্য অভিযানের মত না, সেই ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “কাঠমান্ডুতে অনেক ম্যাপের দোকান আছে। সেখানে অনেক খুঁজে আমরা মাত্র একটি ম্যাপ পেয়েছি, যেখানে দোগারি হিমালের অস্তিত্ব এবং আশপাশের এলাকা সম্পর্কে ভালোভাবে বিস্তারিত দেওয়া আছে। তাছাড়া খুব বেশি তথ্য এ সম্পর্কে নাই। এখন পর্যন্ত গুগলে, গুগল আর্থে বা মানচিত্র যেটা দেখেছি, ওটুকুই।
“এখানে আগে কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি। এমন কাউকে আমরা পাইনি, যিনি ওই এলাকায় বা পথে গিয়েছেন। ফলে এ অভিযানটি শুধুমাত্র এক্সপিডিশন না, এটা এক ধরনের এক্সপ্লোরেশন।”
নেপাল দলে পর্বতারোহী ও গাইড মিংমা গ্যালজে শেরপারও থাকার কথা ছিল। তবে ‘অনিবার্য কারণে’ তিনি যেতে পারছেন না বলে জানান সানভী।