“আমরা যেন সেই প্রশ্নের কাছে নিজেদের না নেই,” বলেন উপদেষ্টা।
Published : 29 Oct 2024, 07:44 PM
জুলাই-অগাস্টে নানা শ্রেণিপেশার মানুষের রক্তের বিনিময়ে সরকার পতনের পর গঠিত নতুন সরকার যেন ভুল আর অন্যায়ের পথে না যায়, সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
তিনি বলেছেন, “এই মানুষগুলোর রক্তের ওপর দিয়ে সরকারে আসছি আমরা, যাতে কোনো ভুল না করি। যাতে আমরা কোনো অন্যায়ের পথে না যাই, তাহলে আমরা বিবেকের কাছে দায়ী থাকব, পুরো বাংলাদেশের মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ থাকব। আমরা যেন সেই প্রশ্নের কাছে নিজেদের না নেই।”
মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আন্দোলনে নিহত নাসির হাসান রিয়াদের দোয়ার অনুষ্ঠানের আগে তিনি একথা বলেন।
বাংলাদেশের নানা শ্রেণিপেশার মানুষ গণআন্দোলনে অংশ নিয়েছিল জানিয়ে নাহিদ বলেন, “ফ্যাসিস্ট শক্তি একদিকে, আরেক দিকে পুরো বাংলাদেশের জনতা। একজন রিকশাওয়ালার পরিবার অংশগ্রহণ করেছে, বস্তির ছেলেমেয়েরা অংশ গ্রহণ করেছে, সরকারি চাকরিজীবীর ছেলেমেয়েরা অংশগ্রহণ করেছে, সেনা কর্মকর্তাদের ছেলেমেয়েরা অংশগ্রহণ করেছে। অনেক আওয়ামী পরিবারের সন্তানেরা অংশগ্রহণ করেছে, তার পরিবার আওয়ামী লীগ করে পদধারী, কিন্তু তার সন্তানেরা আমাদের আন্দোলনে ছিল।
“ফলে এই আন্দোলনের অনেক ধরনের ডাইমেনশন আছে, এটা আমরা হয়তবা আবিষ্কার করতে পারি নাই। গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ থাকবে, আমার প্রত্যাশা এই জনস্মৃতি যেন এত তাড়াতাড়ি ভুলে না যাই। আহতদের বেদনা, শহীদ পরিবারের কষ্ট, আন্দোলনের ডকুমেন্টগুলো আমরা যেন বারবার প্রচার করি। আমাদের জনস্মৃতিতে সেটা খুবই প্রয়োজন। কারণ অনেক ইস্যুতে অনেক কিছু চলে আসে, আমরা ভুলে যাই। পুরো বাংলাদেশকে ভালোভাবে চলতে হলে সেই স্মৃতিগুলোকে বারবার দেখতে হবে। আমাদের নিজেদের সেই বিবেকের সামনে দাঁড় করাতে হবে।”
সরকারি কর্মকর্তাদের প্রতি তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান, “আপনাদের অনেক দায়িত্ব, অনেক ব্যস্ত। আমাদের থেকে অনেক ব্যস্ত, অনেক সময় নিয়ে কাজ করতেছেন। তারপরেও আমি বলব আপনারা চেষ্টা করেন সেই পরিবারগুলোর সঙ্গে একটু কথা বলার।”
হতাহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “কোনো একটা শহীদ পরিবারে দায়িত্ব নেওয়া, কোনো একটা আহত শিক্ষার্থীর দায়িত্ব নেওয়া। সরকারের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা করে হয়তবা আমরা অনেক কিছু করব, কিন্তু এই জনগণের ভেতর থেকে তাদের প্রতি হাত বাড়িয়ে দেওয়া, দায়িত্ব নেওয়া, সেটা অনেক কৃতজ্ঞতা।
“এখনও সিএমএইচে অনেক আহত ভাইবোনেরা আছে। প্রতিটা জেলায় জেলায় আছে, কেন শুধু সরকারের নির্দেশে করতে হবে? প্রতিটা জেলায় ডিসি আছে, ইউএনও অফিসার আছে, তারা তাদের দায়িত্বের বাইরে গিয়ে…এটা তাদের কর্তব্য যে শহীদ পরিবারে খোঁজ খবর নেওয়া। আহত শিক্ষার্থীদের খোঁজ খবর নেওয়া। কারও কেহানো সমস্যা থাকলে সেটা জানানো।”
নিজ থেকে দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই সরকারের জায়গা থেকে তাদের প্রতি আমরা অনেক বেশি হাত বাড়িয়ে দেব। তাদের সমস্যা সমাধান করব। তাদের যে ভবিষ্যৎ জীবন, আহত হয়ে বেঁচে আছেন বা যে পরিবারগুলো আছে, তাদের সেই নিশ্চয়তাটা আমরা দিচ্ছি।”