শিক্ষার্থীরা বিদেশে পড়লে দেশে দেশে সম্পর্ক ভালো হয়: রাষ্ট্রদূত হাস

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাড়ে তিন হাজার দর্শনার্থী মেলায় অংশ নেয়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 Jan 2023, 07:35 PM
Updated : 31 Jan 2023, 07:35 PM

উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া শিক্ষার্থীরা দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্কের আরও উন্নতিতে ভূমিকা রাখে বলে মনে করেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস। 

মঙ্গলবার ঢাকার একটি হোটেলে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের জন্য তোমাদেরকে পেয়ে আমরা উচ্ছ্বসিত। বিশ্বের শ্রেষ্ঠ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে- আমরা কেবল এটাই বিশ্বাস করি না, মনে করি- যুক্তরাষ্ট্র তখনই ভালো, যখন বিদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা সেখানে পড়তে যায়।

“যারা যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসে এবং স্বদেশে ফিরে যায় তারা আরও ভালো বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা আরও বিশ্বাস করি, আমাদের মহান দেশগুলোর সম্পর্ক তখন আরও উন্নত হয়, যখন শিক্ষার্থীরা দুদিক থেকেই পড়তে যায়।”

যুক্তরাষ্ট্র পড়তে যেতে ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত ‘আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় মেলা’র উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রদূত হাস।

এডপ্রোগ্রামস সংস্থার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে বিকালে আধাবেলার ওই মেলার আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের এডুকেশনইউএসএ প্ল্যাটফর্ম।

বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সাড়ে তিন হাজার দর্শনার্থী মেলায় অংশ নিয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে মার্কিন দূতাবাস।

গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রায় ১১ হাজার শিক্ষার্থী পড়তে যাওয়ার কথা উল্লেখ করে পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী পাঠানোর ক্ষেত্রে দ্রুত বিকাশমান দেশগুলোর একটি বাংলাদেশ।

“যুক্তরাষ্ট্র শিক্ষার্থী আসার দিক থেকে বাংলাদেশ ত্রয়োদশ অবস্থানে। তোমাদের মধ্যে যারা অর্থনীতি বা গণিত পড়েছ, তারা ইতোমধ্যে বুঝে গেছ বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার হিসাবে অষ্টম হলেও যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থী পাঠানোর ক্ষেত্রে ত্রয়োদশ অবস্থানে। তোমরা ভাববে, আমরা তো কম প্রতিনিধিত্বশীল।”

যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া বিদেশি শিক্ষার্থীর হিসাবে বাংলাদেশকে অষ্টম স্থানে নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা রোমাঞ্চিত যে, তোমরাই হয়ত ত্রয়োদশ থেকে অষ্টমে নিয়ে আসার অংশবিশেষ, যার মাধ্যমে উপরের দিকে উঠে আসবে বাংলাদেশ।” 

যুক্তরাষ্ট্রের ৪ হাজার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, “সুতরাং যথাযোগ্য জায়গা সেখানে রয়েছে, তোমাদেরকে কেবল সেই জায়গাটি খুঁজে বের করতে হবে।” 

এর আগে রোববার প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয় মেলার আয়োজন করেছিল ‍যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস। সেখানে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতিনিধিদের সাথে তাদের আগ্রহের বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন।

মেলায় অংশ নেওয়া ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছিল কলোরাডো স্টেট ইউনিভার্সিটি, এমব্রি-রিডল স্টেট ইউনিভার্সিটি, আইওয়া স্টেট ইউনিভার্সিটি, কুইনিপিয়াক স্টেট ইউনিভার্সিটি, স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটি, ট্রাইন ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ অ্যারিজোনা, ইউনিভার্সিটি অফ ডেলাওয়্যার, ইউনিভার্সিটি অফ নিউ হ্যাভেন, ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ডাকোটা, আর্লিংটনে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাস এবং ওয়েস্টার্ন কেনটাকি ইউনিভার্সিটি। 

২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্র বরাবরের মতো শীর্ষ গন্তব্যের দেশ ছিল। গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। ২০১১-২০১২ শিক্ষাবর্ষে যেখানে আমেরিকাতে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থী ছিল ৩ হাজার ৩১৪ জন। সেটা বেড়ে ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষে হয়েছে ১০ হাজার ৫৯৭ জন।