অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে বিবৃতি দিয়ে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
Published : 08 Aug 2024, 07:50 PM
শান্তিতে নোবেলবিজয়ী অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করতে ‘প্রস্তুত’ থাকার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টা আগে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর।
গণআন্দোলন ও জনরোষের মুখে পদত্যাগ করে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা ভারতে চলে যাওয়ার পর সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে গঠন করা হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের এক মুখপাত্র বলেন, “আমরা জেনেছি, নোবেলবিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্ব দিতে সম্মত হয়েছেন।
“যেহেতু এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নির্ধারণের লক্ষ্য ঠিক করেছে, আমরা এই অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে সর্বদা প্রস্তুত রয়েছি।”
ছাত্র জনতার বিপুল গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার সাড়ে ১৫ বছরের সরকারের পতনের পর চার দিন ধরে সরকার নেই দেশে। সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক বা অন্তর্বতী সরকার গঠনের সুযোগ না থাকলেও নতুন নির্বাচনের প্রয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেনাবাহিনীও তাতে সমর্থন দিয়েছে।
এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মুহাম্মদ ইউনূসের নাম প্রস্তাব করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তাতে সম্মতি দেন।
সেনাবাহিনী প্রধান ওয়াকার-উজ-জামান রোববার বলেছেন, এ সরকারের উপদেষ্টা হতে পারেন ১৫ জনের মত, কম-বেশিও হতে পারে।
দেশের পরিস্থিতি যখন টালমাটাল, অলিম্পিকের আনুষ্ঠানিকতায় যোগ দিতে অধ্যাপক ইউনূস ছিলেন প্যারিসে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নিতে বাংলাদেশ সময় বুধবার রাতে প্যারিস থেকে দেশের পথে রওনা হন তিনি।
গত সরকারের সময়ে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে ৬ মাসের যে সাজা দেওয়া হয়েছিল, বুধবার তা বাতিল করেছে শ্রম আপিল আদালত।
বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাংলাদেশে দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
“অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সব সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক মূলনীতির প্রতি সম্মান, আইনের শাসন এবং বাংলাদেশি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে হবে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত সপ্তাহগুলোতে প্রাণহানি, মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আহতদের খবরে আমরা গভীর উদ্বেগ ও দুঃখ প্রকাশ করছি। যারা স্বজন হারিয়েছেন এবং এখনও যারা হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন, তাদের সঙ্গে আমরা গভীর শোক ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।”
“পরবর্তী কোনো সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে আমরা সব পক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। সব ধরনের সহিংসতায় জড়িতদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।”
বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখার কথা বলেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই মুখপাত্র।