আবজাল হোসেন এদিন জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন।
Published : 20 Mar 2024, 08:56 PM
অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়া এবং অর্থপাচারের মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেনের স্ত্রী রুবিনা খানমের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
বুধবার মামলার অভিযোগপত্র গ্রহণ করে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আস সামছ জগলুল হোসেন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির এ আদেশ দেন।
আবজাল হোসেন এদিন জামিন চাইলে আদালত তা নামঞ্জুর করেন বলে জানান দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম।
আবজালের পক্ষে জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবী শাহাদাত হোসাইন চৌধুরী।
দুদকের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম গত ২৯ ফেব্রুয়ারি আবজাল হোসেন ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামিরা ১১৩ কোটি ৩৯ লাখ ৬৪ হাজার ৪২৮ টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ মালিক হয়েছেন। ৮৯ কোটি ৮৮ লাখ ৬৬ হাজার ৯০৮ টাকার সম্পদের তথ্য ‘গোপন’ করেছেন।
এছাড়া তারা বিভিন্ন ব্যাংকের ৬৩ হিসাবে লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে ৩২৫ কোটি ১ লাখ টাকা ‘আত্মসাৎ’ করেছেন; মালয়েশিয়ার ৫টি ব্যাংক হিসেবে ২২ লাখ রিঙ্গিত, অস্ট্রেলিয়ার ২২টি ব্যাংক ও ৩ প্রতিষ্ঠানে ১ কোটি ১৮ অস্ট্রেলিয়ান ডলার, কানাডায় ২ ব্যাংকে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কানাডিয়ান ডলার ‘পাচার’ করেছেন এবং পাশাপাশি কানাডা থেকে ৮ লাখ ৪৪ হাজার ডলার অস্ট্রেলিয়ায় পাচার করেছেন বলে অভিযোগ করা হয় সেখানে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, আবজাল মালয়েশিয়ায় ৯ লাখ ২৯ হাজার ৬৭০ রিঙ্গিত, অস্ট্রেলিয়ায় ৫৬ লাখ ৮৮ হাজার ৬৭৭ অজি ডলার এবং কানাডায় কানাডিয়ান ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৫৫ ডলার পাচার করেন। আর তার স্ত্রী রুবিনা মালয়েশিয়ায় ১৩ লাখ ৫১ হাজার ৫২০ রিঙ্গিত, অস্ট্রেলিয়ায় ৬১ লাখ ৪৯ হাজার ৭১৮ অজি ডলার এবং কানাডায় ৪ লাখ ৬১ হাজার কানাডিয়ান ডলার পাচার করেন।
দুদক বলছে, দেশে আবজালের ৬ কোটি ৬৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকার এবং রুবিনার ১০৬ কোটি টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়।
আবজাল হোসেন ১৯৯৫ সালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একটি আঞ্চলিক প্রকল্পে ‘অফিস সহকারী’ পদে অস্থায়ীভাবে যোগ দেন। পরে তিনি হিসাব রক্ষক কর্মকর্তা হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে অধিদপ্তরের মহাখালী এডুকেশন শাখায় কর্মরত ছিলেন। সবশেষ তিনি অধিদপ্তরের ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।
আর আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানম ১৯৯৮ সালে একই অধিদপ্তরের আরেকটি আঞ্চলিক প্রকল্পে ‘স্টেনোগ্রাফার’ পদে যোগ দিয়ে ২০০০ সালে স্বেচ্ছায় অবসরে যান।
২০১৯ সালে আবজাল দম্পতির নামে দেশে-বিদেশে ‘বিপুল পরিমাণ’ সম্পদের তথ্য পাওয়ার কথা জানান দুদক কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরুর পর আবজাল হোসেনকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এরপর ২০১৯ সালের ২৭ জুন দুদকের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম দুটি মামলা করেন, যার একটিতে আবজাল ও রুবিনাকে এবং একটিতে শুধু আবজালকে আসামি করা হয়।
মামলা হওয়ার পর আবজাল ২০২০ সালের ২৩ অগাস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুরনো খবর:
স্বাস্থ্যের আবজাল দ্বিতীয় দফা রিমান্ডে
আবজাল-রুবিনা দম্পতির বিরুদ্ধে ৩১৯ কোটি টাকার দুর্নীতির মামলা