চাবি দিয়ে তালা খুলে মোটর সাইকেল নিয়ে চম্পট দেওয়া- এই পুরো ঘটনা ঘটাতে তাদের লাগে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ড। দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই মোটর সাইকেল চুরি আর কেনাবেচা করে আসছে চক্রটি।
দুর্ধর্ষ এই চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার ও চুরি করা ১২টি মোটর সাইকেল উদ্ধোরের পর বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব তথ্য জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ১০ মে ভাটারা থানায় দায়ের করা মোটর সাইকেল চুরির একটি মামলার তদন্তে নেমে সংঘবদ্ধ মোটর সাইকেল চোরচক্রের সন্ধান পান তারা।
“গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, চক্রের সক্রিয় সদস্যরা এবং চোরাই মোটর সাইকেল হবিগঞ্জ এলাকায় রয়েছে।”
এরপর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ হবিগঞ্জ থেকে চক্রটির সদস্য জাকারিয়া হোসেন হৃদয়কে (২৫) গ্রেপ্তার।
ডিবি প্রধান হারুন বলেন, “পরে হবিগঞ্জ সদর থানা এলাকায় হৃদয়ের দেখিয়ে দেওয়া একটি গ্যারেজ থেকে ১২টি চোরাই মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়।
তাদের চুরির কৌশল সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চক্রের একজন সদস্য প্রথমে মোটর সাইকেল গতিবিধি অনুসরণ করেন। এরপর সুবিধাজনক জায়গায় তাদের অন্য সদস্যরা মোটর সাইকেলটি কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করেন। পরে সুযোগ বুঝে নিজেদের সাথে থাকা মাস্টার চাবি দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে মোটর সাইকেলের তালা খুলে গাড়িটি নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
হারুন অর লমীধ বলেন, চক্রের সদস্যরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মোটর সাইকেল চুরি করে হবিগঞ্জের খালেক এবং ইকবালের কাছে বিক্রি করেন।
“চক্রটি রাজধানী ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, নাসিরনগর, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি সপ্তাহে দুই-তিনটি মোটর সাইকেল চুরি করে হবিগঞ্জ সদরের লোকরা বাজার, লাখাই রোডের ‘বন্ধু মটরস’ এর মালিক মোহনের কাছে বিক্রি করে।”
তিনি বলেন, চোরাই মোটর সাইকেলগুলো ২৫-৩০ হাজার টাকা দরে কিনে ওই গ্যারেজে যন্ত্রপাতি, চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর বদলে ৪০-৫০ হাজার টাকা দামে বিক্রি করা হত।
গ্যারেজ মালিক মোহনকে খোঁজা হচ্ছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
মোটর সাইকেল চুরি হলে থানায় জিডি না করে মামলা করার পরামর্শ দেন ডিবি প্রধান।
থানায় মামলা নিতে না চাইলে ভুক্তভোগীদের গোয়েন্দা কার্যালয়ে যোগাযোগ করার আহ্বানও জানান তিনি।