গাবতলী ও মহাখালী থেকে বাস চললেও সংখ্যায় কম।
Published : 29 Jul 2023, 01:53 PM
মাতুয়াইলে মহাসড়কে সংঘর্ষের পর ঢাকার সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলামুখী বাস ছাড়া প্রায় ৪ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। এসময় গাবতলী থেকে উত্তরাঞ্চলগামী এবং মহাখালী থেকে ময়মনসিংহগামী বাস চললেও সংখ্যায় ছিল কম।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে সরকার পতনেরেএক দফা আন্দোলনে নামা বিএনপি শনিবার সকাল ১১টা থেকে ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থানের কর্মসূচি দেয়।
তার পাল্টায় আওয়ামী লীগের যুব সংগঠন যুবলীগও পাল্টা অবস্থানের কর্মসূচি িদলে পুলিশ কাউকে কর্মসূচি পালনের অনুমতি না দিয়ে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছিল।
যাত্রাবাড়ী, নয়াবাজার, গাবতলী ও আবদুল্লাহপুরে অবস্থান নেওয়ার কথা ছিল বিএনপি। তবে সব কটি স্থানেই তারা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে।
যাত্রাবাড়ীতে অবস্থান নিতে না পেরে মাতুয়াইলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নেয় বিএনপিকর্মীরা। সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাদের তুলে দিতে গেলে বাধে সংঘর্ষ। দফায় দফায় সংঘর্ষের মধ্যে দুটি বাস ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ হয়।
এরপর থেকে সায়েদাবাদ থেকে কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম অঞ্চলমুখী বাস ছাড়া বন্ধ হয়ে যায়। এসব জেলা ছেড়ে আসা সায়েদাবাদমুখী বাসগুলোও কাচপুরের পরে আটকে যায়।
সায়েদাবাদ আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাড়ে ১১টার আগ পর্যন্ত গাড়ি চলছিল। তবে এরপর গাড়ি যেতে পারছে না।
“ঢাকার দিকে ঢোকার মুখে মাতুয়াইলের আগে বাসগুলো আটকে গেছে। একইভাবে পোস্তগোলা দিয়ে যেসব গাড়ি আসছে সেগুলো ঢুকতে পারছে না। একইভাবে বেরও হতে পারছে না। শুনেছি মাতুয়াইলে চারটি বাস ভাংচুর করেছে।”
মাতুয়াইল মা ও শিশু হাসপাতালের সামনে পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষের পর বেলা দেড়টায়ও পরিস্থিতি উত্তেজনাকর ছিল।
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার হোসেন মেহেদী হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিএনপির লোকজনকে যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি না করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা নিষেধ উপেক্ষা করে রাস্তায় নামলে পুলিশ বাধা দেয়।”
সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নিয়ে বিএনপিকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ছিল, আর পুলিশ রায়ট কার নিয়ে তাদের ধাওয়া দিচ্ছিল।
পরিস্থিতি শান্ত হলে বেলা ৩টার পর থেকে আবার বাস চলাচল শুরু হয়।
গাবতলীতে সকালে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তর কমিটির সভাপতি আমানউল্লাহ আমানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছিল।
সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ গিয়ে আমানকে আটক করে পুলিশের গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়, ছত্রভঙ্গ করে দেয় অন্য নেতা-কর্মীদের।
দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব পরিবহনের টিকেট কাউন্টার খোলা আছে। তবে যাত্রী কম, টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু বাস যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে।
শ্যামলী পরিবহনের কাউন্টারের টিকেট বিক্রেতা মন্টু মিয়া বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কাউন্টার খোলা। টিকেট বিক্রি করছি। কিন্তু অন্যান্য দিনের চেয়ে যাত্রী অনেক কম। যাত্রী নাই, এজন্য দুইটা বাস ছাড়ছি, দুই তিন বাসের যাত্রী এক বাসে দিয়ে ছেড়েছি।”
ঢাকা থেকে ময়মনসিংহের পথে আবদুল্লাহপুরেও সকালে অবস্থান নিয়েছিল বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তবে পুলিশ গিয়ে তাদের তুলে দেয়। ফলে সেই সড়কে গাড়ি চলাচল করছে।
দুপুর ১টার দিকে মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, ময়মনসিংহের বিভিন্ন রুটের বাস টার্মিনালে আসছে, কিছু বাস ছেড়েও যাচ্ছে। তবে যাত্রী অন্য সময়ের তুলনায় কম।
শেরপুর থেকে আসা বাসের চালক হেমায়েত উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি ওভারব্রিজের (বিআরটি) উপর দিয়ে চলে আসছি। তবে নিচে দিয়ে যারা আসছে তারা আটকে গেছে।”
চন্দ্রা থেকে আসা আজমেরী গ্লোরি পরিবহনের চালকের সহকারী হেলাল উদ্দিন বলেন, “আমরা এক ঘণ্টা আটকায়া ছিলাম রাস্তায়। কিছুক্ষণ আগে ছাড়ছে। তয় উল্টা দিকে যাইতে পারতেছে না।”
ময়মনসিংহ রুটের সৌখিন পরিবহনের চালকের সহকারী আহমেদ আলী বলেন, “গাড়ি ছাড়ছি। কিন্তু যাত্রী নাই, পুরাই ফাঁকা। সামনে গেলে দেখি কিছু যাত্রী পাই কি না।”
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) নাভিদ কামাল শৈবাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাস্তায় যানবাহল চলাচল অব্যাহত আছে। সাময়িক কিছু সমস্যা ছিল, কিন্তু এখন স্বাভাবিক। তবে আজ রাস্তায় গাড়ি তুলনামূলক কম।”