কমিটি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও সুপারিশ দেবে।
Published : 22 Jan 2025, 07:06 PM
দীর্ঘদিনের ধরে চলে আসা সমালোচনার মধ্যে এবার বিদ্যুতের ট্যারিফ বা বিদ্যুতের দাম পর্যালোচনা করবে ছয় সদস্যের কমিটি।
সদ্য বাতিল হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইনের আওতায় ক্রয়চুক্তি হওয়া কোম্পানিগুলোর বিদ্যুতের দাম পর্যালোচনার জন্য মঙ্গলবার অন্তর্বর্তী সরকার এ কমিটি করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, বিদ্যুতের দাম পর্যালোচনা, বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সঙ্গে চুক্তি নিয়ে নতুন করে আলোচনা ও সুপারিশ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হল।
গ্রিন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের অধ্যাপক মো. কামরুল আহসানকে কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের উপসচিব (উন্নয়ন-১) মোহাম্মদ সোলায়মান।
অন্য সদস্যরা হলেন- বিদ্যুৎ খাতের সংস্কার কমিটির আর্থিক মডেলিং বিশেষজ্ঞ ও পাওয়ার সেলের পরামর্শক তোহা মুহাম্মদ, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনজুর আলম, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (অর্থ) অঞ্জনা খান মজলিশ ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের পরিচালক (ক্রয় পরিদপ্তর) মো. নান্নু মিয়া।
কমিটি প্রয়োজনে আরও সদস্য যুক্ত করতে পারবে। কমিটির সদস্যদের সভা ও সম্মানী ভাতা দেবে পাওয়ার সেল।
বর্তমানে সারাদেশে ১৪২টি বিদ্যুৎকেন্দ্র সক্রিয় বা উৎপাদনে রয়েছে। এর মধ্যে বিদ্যুৎ, জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ আইনের অধীনে চুক্তিবদ্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ৯১টি। এরমধ্যে সরকারি, বেসরকারি, আইপিপি বিদ্যুৎকন্দ্রে রয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়; দল সাড়ে ১৫ বছরের শাসনে বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
এছাড়া বসিয়ে বসিয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্রলোকে ভাড়া দেওয়া, দায়মুক্তি, বেশি দামে বিদ্যুৎ কেনা ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর সমালোচনা ছিল শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে।
সে পরিপ্রেক্ষিতে ৩ অক্টোবর ভারতের আদানি পাওয়ারসহ বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত ১১টি চুক্তি খতিয়ে দেখতে পর্যালোচনা কমিটি করা হয়।
পর্যালোচনার তালিকায় রয়েছে সামিট গ্রুপের মেঘনাঘাট ৫৮৩ মেগাওয়াট ও কড্ডা ৩০০ মেগাওয়াট, প্যারামাউন্ট গ্রুপের বাঘাবাড়ি ২০০ মেগাওয়াট, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের মালিকানাধীন পটুয়াখালী ১০০ মেগাওয়াট, ওরিয়ন গ্রুপের মোংলা ১০০ মেগাওয়াট, মিডল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানির আশুগঞ্জ ১৫০ মেগাওয়াট, আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি তাহ্জীব আলম সিদ্দিকীর মালিকানাধীন ডরিন পাওয়ারের মানিকগঞ্জ ১৬২ মেগাওয়াট, বেক্সিমকো গ্রুপের সুন্দরগঞ্জ ২০০ মেগাওয়াট, ইন্ট্রাকো সোলারের লালমনিরহাট ৩০ মেগাওয়াট এবং যৌথ মালিকানার কোম্পানির এইচডিএফসি সিন-পাওয়ারের সুতিয়াখালী ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র।
নভেম্বরে উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (কুইক রেন্টাল) আইন, ২০১০’ বাতিল করে গেজেট প্রকাশ করেছে সরকার।