এই কমিশনের কাজ প্রতিহিংসামূলক হবে না, বলেছেন আইনমন্ত্রী।
Published : 01 Aug 2023, 09:23 PM
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজতে কমিশন গঠনে আইনের খসড়া ‘চূড়ান্ত’ হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুলের লেখা ‘পনেরো আগস্টের নেপথ্য কুশীলব’ শীর্ষক বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি একথা জানান বলে আইন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়।
আনিসুল হক বলেন, “এই কমিশন গঠনের প্রারম্ভিক কাজ হল আইন তৈরি করা। এই আইনের ‘ড্রাফট’ ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি পেলে সেটি জাতীয় সংসদে নিয়ে যাওয়া হবে।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।
একদল সেনা কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ড ঘটালেও এর পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা আওয়ামী লীগ নেতারা বরাবরই বলে আসছেন।
খুনিদের বিচার হলেও নেপথ্যের ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করতে ২০২০ সালে আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি এক প্রস্তাব দেয়। তার ধারাবাহিকতায় এই কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর উদ্যোগ নেয় আইন মন্ত্রণালয়।
১৫ অগাস্ট হত্যাকাণ্ড তদন্তে জাতীয় কমিশন গঠনের প্রস্তাব সংসদীয় কমিটির
বঙ্গবন্ধু হত্যার কুশীলবদের মুখোশ উন্মোচনে কমিশন হবে: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যার নেপথ্যে থাকাদের খুঁজতে কমিশন গঠনের প্রক্রিয়া চলছে: আইনমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মামলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আনিসুল হক বলেন, ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎকে বদলে দেওয়ার জন্য যে কলঙ্কিত চেষ্টা নেওয়া হয়েছিল, যে নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল, তার সঙ্গে কারা কারা জড়িত ছিল, সেটা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোই হবে কমিশনের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি একইসঙ্গে বলেন, “কমিশনের কাজ প্রতিহিংসামূলক হবে না, কমিশন নিয়ে ভবিষ্যতে কেউ যেন প্রশ্ন তুলতে না পারে, সেভাবেই কাজ করবে।”
বঙ্গবন্ধুর দুই খুনি রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে এবং নুর চৌধুরী কানাডায় অবস্থান করছেন। তাদের দেশে ফেরত আনতে সরকর সচেষ্ট বলে জানান আনিসুল হক।
তিনি বলেন, নুর চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কানাডা যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে, সেটা উত্তরণের জন্য কানাডিয়ান সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে।
“একটা স্টেজে গিয়ে আমরা বলব, আমাদের যে এতদিনের বন্ধুত্ব, সেই বন্ধুত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে, যদি তাকে ফেরত না দেওয়া হয়।”
‘পনেরো আগস্টের নেপথ্য কুশীলব’ বইটি নিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, “আমি যতটুকু দেখেছি ও পড়েছি, তাতে মনে হয়েছে, এই একটি মাত্র বই পড়ে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পূর্ববর্তী নীল-নকশা ও ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ও এর নৃশংসতা, পনেরই আগস্ট পরবর্তীকালে জিয়াউর রহমান কর্তৃক খুনিদের পুরস্কার ও পৃষ্ঠপোষণ, স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির পুনর্জাগরণ, বিচারহীনতার সংস্কৃতি প্রবর্তনসহ সবরকম অপরাজনীতির আবির্ভাব এবং বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথপরিক্রমা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।”
অনুষ্ঠানে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ বক্তব্য রাখেন।