১৫ অগাস্ট হত্যাকাণ্ড তদন্তে জাতীয় কমিশন গঠনের প্রস্তাব সংসদীয় কমিটির

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনার বিষয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠনের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 August 2020, 04:12 PM
Updated : 19 Nov 2020, 02:19 PM

সোমবার আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

 বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতির পিতার হত্যাকাণ্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত, এর নেপথ্যে কারা আছে ইত্যাদি সার্বিক বিষয়ে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশের জন্য এই কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।”

কমিটির সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “জাতির পিতার হত্যার পেছনের অনেক ঘটনা জাতি জানে না। এই ষড়যন্ত্রে বিষয়ে অজানা তথ্য যাতে প্রকাশ হয় সেজন্য কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়েছে।”

কমিটির সভাপতি আবদুল মতিন খসরুর সভাপতিত্বে বৈঠক কমিটির সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, মোস্তাফিজুর রহমান, মো. শামসুল হক টুকু, শহীদুজ্জামান সরকার, শামীম হায়দার পাটোয়ারী ও গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার অংশ নেন।

এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের ১৭ জন সদস্যকে নির্মমভাবে হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের জন্য একটি জাতীয় কমিশন গঠনের সুপারিশ করা হয়।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার চার বছরের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।

একদল সেনা কর্মকর্তা এই হত্যাকাণ্ডে নেতৃত্ব দিলেও এর পেছনে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথা আওয়ামী লীগ নেতারা বরাবরই বলে আসছেন।

বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর বাংলাদেশের উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল। খুনিদের বাঁচাতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল, তাদের নানা পদ দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়েছিল।

১৯৯৬ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় ফেরার পর ইতিহাসে চিহ্নিত কালো ওই অধ্যাদেশ বাতিলের পর জাতির পিতার খুনের বিচারের পথ খোলে।

এরমধ্যে বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিগত সহকারী মহিতুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর ঢাকার তখনকার জেলা ও দায়রা জজ কাজী গোলাম রসুল ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

আপিলের রায়ে এই ১৫ জনের মধ্যে তিনজন খালাস পান। যে ১২ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে উচ্চ আদালত, তাদের একজন আজিজ পাশা পলাতক থাকা অবস্থায় দেশের বাইরে মারা যান বলে খবর আসে।

বাকি ১১ জনের মধ্যে সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ, মহিউদ্দিন আহমদ, এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিন বন্দি অবস্থায় আদালতে রিভিউ আবেদন করলে তা খারিজ হয়ে যায়।

এরপর ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ওই পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর হয় ঢাকার কারাগারে। বাকি ছয়জন পলাতক থেকে যান।

তার প্রায় ১০ বছর পর এ বছরের ৭ এপ্রিল ভোরে পলাতক ৬ জনের একজন ৭২ বছর বয়সী মাজেদকে ঢাকার গাবতলী থেকে গ্রেপ্তারের কথা জানায়। কেরানীগঞ্জের কারাগারে ১২ এপ্রিল তার ফাঁসি কার্যকর হয়।