“আমাদের ব্যবহার করে উনারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন। সাথে সাথে আমাদের কিছু সহকর্মী সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন পদোন্নতি ও সম্পদের পাহাড় গড়ার,” বলেন তিনি।
Published : 03 Dec 2024, 06:37 PM
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকতে গত ১৫ বছর পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহারের চেষ্টা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
তিনি বলেছেন, “জনগণের সামনে আমাদের শত্রু বানানো হয়েছে। আমাদের ব্যবহার করে উনারা ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছেন। সাথে সাথে আমাদের কিছু সহকর্মী সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছেন পদোন্নতি ও সম্পদের পাহাড় গড়ার।
“শুধু পুলিশ নয় বিভিন্ন ক্যাডার, বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের অফিসার এবং কর্মচারী উভয়ই সম্পদশালী হওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে, যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক।”
ঢাকার মোহাম্মদপুরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন।
১৫ বছর আগে পুলিশের ভাবমূর্তি ‘সংকটে ছিল না’ ছিল না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এখন পুলিশের মধ্যে যে ইমেজ সংকট সৃষ্টি হয়েছে এটা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা চলছে। এরপরও এই পুলিশ বাহিনী ছাড়া সমাজ চলবে, এটা আশা করার কোনো সুযোগ নেই। দ্বিতীয় কোনো অপশনও নেই।”
মতবিনিময় সভায় মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি, ব্যাটারির রিকশা চলাচল ও যানজটসহ বিভিন্ন বিষয়ে ডিএমপি কমিশনারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন অংশগ্রহণকারীরা।
মোহাম্মদপুর এলাকায় চাঁদাবাজি প্রসঙ্গে ফারহানা শারমিন সুচী নামে এক নারী বলেন, “চাঁদাবাজি আগে হয়েছে, এখনও হচ্ছে। আগে নিত একটি পক্ষ, তারা চলে যাওয়ার পর একইভাবে আরেকটি পক্ষ চাঁদা আদায় করছে। কোনো পরিবর্তন হয়নি।”
জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, “মোহাম্মদপুরে অন্য এলাকার লোক এসে চাঁদাবাজি করে না। চাঁদাবাজি করতেছে আপনার প্রতিবেশী। এই থানা এলাকার লোক।
“আপনি প্রতিরোধ করেন, সংগঠিত হন। বলেন চাঁদা দিব না। তারপর দেখি তারা কি করে।”
চাঁদাবাজি প্রতিরোধে প্রতিবন্ধকতা পেলে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দেন পুলিশ কমিশনার। তিনি বলেন, “ফুটপাতের হকার থেকে চাঁদা তোলা হয়। এটি বন্ধে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমি তথ্য সংগ্রহ করছি কারা ফুটপাথ থেকে চাঁদা নেয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।”
ব্যাটারির রিকশা চলাচলের প্রয়োজনীয়তা মতবিনিময় সভায় তুলে ধরেন এক ব্যক্তি। এ রিকশা উঠিয়ে না দিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলাচলে নীতিমালার কথা বলেন তিনি।
তার বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে কমিশনার সাজ্জাত আলী বলেন, “নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অটোরিকশার প্রয়োজন হয়েছে রয়েছে। তবে যে হারে অটোরিকশা বৃদ্ধি পাচ্ছে, সে হারে যদি বাড়তেই থাকে তাহলে ঘরের বাইরে যাওয়া যাবে না।”
নতুন কোনো অটোরিকশা যেন রাস্তায় বের না হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা কামনা করে এসব রিকশাকে নিয়মের মধ্যে আনার কথা বলেন কমিশনার।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীদের একজন বলেন, বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ে নেতাকর্মীরা বক্তব্য দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অসংখ্য মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছেন।
এর জবাবে পুলিশ কমিশনার বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। মামলার বোঝা অচিরেই নেমে যাবে। তবে এটি একটি লিগ্যাল প্রসেস। আইনগত বিষয়গুলো দেখা হচ্ছে।
“ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় অনেক ঘটনা ঘটেছে, হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অনেক মামলা হয়েছে। মামলাগুলো নিয়ে পুলিশ দ্রুত কাজ করছে। আমরা চাই এসব মামলার কুইক ডিসপোজাল। সাজা হোক বা খালাস পাক। যারা প্রাণ দিয়েছে, তাদের পরিবার দেখে যাক।”