“কোনো এক অজানা কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানি মামলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল; জুলাই বিপ্লবের পরেও কোনো এক অজানা কারণে বন্ধ থেকে যায়,” বলেন সাইফুল্লাহ খাঁন সাইফ।
Published : 26 Apr 2025, 03:48 PM
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় হাই কোর্টের রায় ঘোষণার পর এক সপ্তাহের মধ্যে তা কার্যকরের দাবি তুলেছে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশন।
সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্যদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠনটির সদস্যরা আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে নিজের 'কার্যক্রম' ঠিক করতে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করেছেন।
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মেহেদী হাসান বলেন, “বিপ্লব পরবর্তী সময়ে আট মাস পার হলেও মেজর সিনহার ফাঁসির রায় কার্যকরের পদক্ষেপ দেখতে পারি নাই।
“আশা করছি, মেজর সিনহা হত্যা মামলার ডেথ রেফারেন্সের চলমান শুনানি আগামী সপ্তাহেই শেষ হবে এবং উচ্চ আদালত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখবেন।”
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে গুলি করে হত্যা করা হয় সিনহা মো. রাশেদ খানকে। স্বেচ্ছায় অবসর নেওয়ার পর কয়েকজন তরুণকে সঙ্গে নিয়ে তিনি ভ্রমণ বিষয়ক তথ্যচিত্র বানানোর জন্য কক্সবাজারে গিয়েছিলেন।
এ হত্যাকাণ্ডের দায়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের সাবেক পরিদর্শক লিয়াকত আলীর ফাঁসির রায় দেয় কক্সবাজারের বিচারিক আদালত। এ হত্যা মামলায় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন (ডেথ রেফারেন্স) ও আপিলের ওপর হাই কোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে গত ২৩ এপ্রিল।
সিনহা হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ‘সর্বোচ্চ পর্যায়ে’ যোগাযোগ করার কথা জানিয়ে মেহেদী হাসান বলেন, “তারা আমাদের বলেছে আগামী চার মাসের মধ্যে এটা শেষ করে ফেলবে। আমরা চাই, কার্যক্রমটা অতি দ্রুত শেষ হোক, যদি সম্ভব হয় সেটা ১৫ দিনের মধ্যে শেষ হোক।
“আশা করছি, সেখানেও রায়টা বহল রাখবেন এবং রায়টা দেওয়ার সাত দিনের মধ্যে কার্যকর করতে হবে।”
তিনি বলেন, “শুধু সিনহা স্যারের মধ্যেই থাকতে চাই না, যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, প্রত্যেকটা হত্যাকাণ্ডের নিন্দা বিচারিক প্রক্রিয়ায় চোখ রয়েছে। সবগুলো ঘটনায় আমাদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি থাকবে।”
এক প্রশ্নের উত্তরে এক্স-ফোর্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সচিব অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট সাইফুল্লাহ খাঁন সাইফ বলেন, “মেজর সিনহা স্যারের ইস্যুটা নিয়ে আজকে তিন বছর যাবত স্যারের পরিবার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। কোনো এক অজানা কারণে ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে এই মামলার ডেথ রেফারেন্স শুনানি মামলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
“জুলাই বিপ্লবের পরেও কোনো এক অজানা কারণে বন্ধ থেকে যায়। অজানা কারণটা খুঁজতে গিয়ে আমরা অ্যাটর্নি জনারেলের সাথে দেখা করলাম। পরবর্তীতে আমাদের অন্যান্য অফিসাররাও নিজেদের নৈতিক জায়গা থেকে বিভিন্ন জায়গায় দেখা করে।”
সংবাদ সম্মেলনে মেহেদী হাসান বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যক্রম প্রশংসিত হচ্ছে। একটা বিষয়ে দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেটা আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের।
“আপনাদের মাধ্যমে ওনাকে সাবধান করতে চাই, যে আপনি সাবধান হয়ে যান। দেশের জনতা যেমন হাসিনাকে টেনে নামাইছে, আপনার গদিও কিন্তু ঠিক থাকবে না। আসিফ নজরুল আপনি সাবধান হয়ে যান, আপনার কার্যক্রমটা ঠিক করেন।”
আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, “আপনি দেশের বিপক্ষে কাজ করবেন, সেটা কিন্তু হবে না। প্রধান উপদেষ্টা অন্তন্ত দক্ষতার সাথে দেশ পরিচালনা করছেন। চাঁদের যেমন একটা কলঙ্ক আছে, আমার মনে হয় বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদের কলঙ্ক হচ্ছে ড. আসিফ নজরুল।”