প্রধান বিচারপতির বিশেষ অবসর ভাতার বিল পাস হয়েছে সংসদে।
Published : 09 Jan 2023, 06:40 PM
উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানালেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সোমবার সংসদে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল’ পাসের আলোচনায় বিরোধীদলের সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
ওই আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টি ও গণফোরামের সংসদ সদস্যরা বিচারক নিয়োগে আইন করার দাবি জানান।
গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান বলেন, সংবিধান অনুযায়ী এখন উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
“বিচারক নিয়োগের ক্ষেত্রে অযোগ্যতার কথা বলা থাকলেও যোগ্যতার মানদণ্ড বলা নেই। এক্ষেত্রে বিচারক নিয়োগে সুনির্দিষ্ট আইন করা হলে নিয়োগ প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ থাকবে না।”
নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে সম্প্রতি আইন হয়েছে, একইভাবে বিচারক নিয়োগেও আইন করা দরকার বলে মত দেন এ সংসদ সদস্য।
জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমানও একই কথা বলেন।
পরে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বিচারক নিয়োগের আইন করার জন্য সরকার কাজ করছে। ‘কিছু দিনের মধ্যেই’ এই আইন সংসদে আনতে পারবেন।
প্রধান বিচারপতির বিশেষ অবসর ভাতার বিল পাস
আলোচনা শেষে ‘বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারক (ছুটি, পেনশন ও বিশেষাধিকার) বিল- ২০২৩’ জাতীয় সংসদে পাস হয়।
এর আগে বিলের উপর দেওয়া সংশোধনী, জনমত যাচাই ও বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবগুলো নিস্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।
১৯৮২ সালে সামরিক আমলে অধ্যাদেশ দিয়ে এ সংক্রান্ত আইন হয়। সেটি বাতিল করে বাংলায় নতুন এই আইনটি করা হয়েছে।
অবসরের পর প্রধান বিচারপতির জন্য মাসে ৭০ হাজার টাকা বিশেষ ভাতার বিধান রেখে আইনটি পাস হয়।
এতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি অবসরের পর তার জীবদ্দশায় গৃহসহায়ক, গাড়িচালক, দারোয়ান সেবা, সাচিবিক সহায়তা এবং অফিস কাম বাসভবনের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতি মাসে ৭০ হাজার টাকা বিশেষ ভাতা পাবেন।
এছাড়া একজন বিচারককে তার মোট কর্মকালীন ছুটির শর্ত অনুযায়ী অর্ধ গড় বেতনে মোট ৩৬ মাসের অধিক ছুটি মঞ্জুর না করার বিধান রাখা হয়েছে।
কোনো বিচারকের প্রকৃত কর্মকালের এক-চব্বিশাংশ মেয়াদ পর্যন্ত তাকে পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি মঞ্জুর করা যাবে। পূর্ণ গড় বেতনে ছুটি এককালীন পাঁচ মাস এবং অন্য ছুটি এককালীন ১৬ মাসের বেশি মঞ্জুর করা যাবে না।
কোনো বিচারক পূর্ণ গড় বেতনে ছুটিতে থাকাকালে নির্ধারিত মাসিক বেতনের সমান হারে ছুটিকালীন বেতন প্রাপ্য হবেন।
কোনো আঘাতের কারণে অথবা দায়িত্ব পালনকালে আহত হয়ে কাজ করতে অক্ষম হলে বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি দেওয়ার বিধানও রাখা হয়েছে আইনে।
নতুন আইনে বলা হয়েছে, বিচারকদের পেনশন ও আনুতোষিক মঞ্জুর করার এখতিয়ার থাকবে রাষ্ট্রপতির হাতে।
অবসরে যাওয়া বিচারকরা উৎসব ও বাংলা নববর্ষ ভাতা পাবেন। কোনো বিচারক অনুমোদিত ছুটি অবকাশের অতিরিক্ত অনুপস্থিতিকালের জন্য কোনো বেতন প্রাপ্য হবেন না।
নতুন আইনে উচ্চ আদালতের বিচারকদের ছুটি, ছুটি নগদায়ন, আনুতোষিক ও পারিবারিক পেনশন, ভবিষ্য তহবিল ও পেনশন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধান সম্পর্কে বলা হয়েছে।