“যত লোক এসেছেন, তাদের বেশিরভাগই বই কেনেননি। অনেকে এসে স্টলের সামনে বই হাতে নিয়ে ছবি তুলেছেন। তবে এই লোক সমাগমের আনন্দটাও আমরা উপভোগ করছি,” বলেন এক প্রকাশক।
Published : 11 Feb 2024, 08:44 PM
অমর একুশে বইমেলার দ্বিতীয় সপ্তাহে ছুটির দিনে ছিল উপচেপড়া ভিড়; অন্যদিনের তুলনায় বেড়েছে বিক্রিও।
বইমেলায় এই বিপুল জনসামগমকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন প্রকাশক ও বিক্রেতারা। তবে এও বলছেন, ছুটির দিনে বিক্রি বাড়লেও তা লোকসমাগমের অনুপাতে বেশি নয়। অনেকে আসছেন, বই হাতে ছবি তুলছেন, এরপর চলে যাচ্ছেন।
শুক্র ও শনিবার মেলার সাতটি প্রবেশদ্বার দিয়ে মোট ২ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ প্রবেশ করে বলে জানান মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, এর মধ্যে শুক্রবার প্রবেশে করেছে ১ লাখ ৬৯ হাজার ৫১৩ জন এবং শনিবার সেই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১৫ হাজার ৪৯৪ জন।
“সাতটি প্রবেশদ্বার দিয়ে যারা ঢুকেছেন, তাদের হিসাব অনুযায়ী এই সংখ্যা। কেউ কেউ হয়ত একাধিকবারও প্রবেশ করেছেন।”
ছুটির দিনে মেলায় বই কেনার চেয়ে ঘুরে বেড়ানো আর আনন্দ আড্ডাতেই মেতে থাকতে দেখা যায় আগতদের।
দর্শনার্থীদের ‘বেশিরভাগই’ বই না কিনলেও তাদের উপস্থিতির আনন্দটা উপভোগের কথা জানান পেন্ডুলাম পাবলিশার্সের স্বত্ত্বাধিকারী রুম্মান তাশফিক।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “যত লোক মেলায় এসেছেন, তাদের বেশিরভাগই বই কেনেননি। অনেকে এসে স্টলের সামনে বই হাতে নিয়ে ছবি তুলেছেন। তবে এই লোক সমাগমের আনন্দটাও আমরা উপভোগ করছি। আশা করি বাকি দিনগুলোয় লোক সমাগম হবে এবং বই বিক্রিও বাড়বে।”
শুক্রবার মেলায় এসেছিলেন কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “এবার মেলায় যে সংখ্যায় মানুষের সমাগম হচ্ছে, সেই তুলনায় হাতে হাতে বই দেখা যায়নি।
“যারা বইমেলায় আসেন, সবাই যদি একটা করে হলেও বই কিনতেন, তবে অন্যরকম হত।”
মেলায় বেশি লোক সমাগমের প্রয়োজন আছে মন্তব্য করে আগামী প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী ওসমান গণি বলেন, “লোক এলে বই বিক্রি হবে। লোকজন এলেই তো মেলার প্রাণ জেগে ওঠে। এই সমাগম থেকে সবাই যে বই কিনবে তা নয়, তবে অনেকে বই কিনছেনও।”
ছুটির দুই দিনে মেলায় কী পরিমাণ বই বিক্রি হয়েছে, তার সঠিক চিত্র আপতত নেই মেলা কমিটি বা প্রকাশক সমিতির কাছে। তবে তারা বলছেন, অন্য যে কোনো দিনের তুলনায় ছুটির দুই দিনে বিক্রি হয়েছে বেশি।
বাতিঘর প্রকাশনীর সত্ত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এবার দ্বিতীয় সপ্তাহেই মেলায় লোক সমাগম হয়েছে, এটা ইতিবাচক। সবাই যে বই কিনবে তা নয়। অনেকে বই দেখছেন, এতে করে বইয়ের সঙ্গে একটা সম্পর্ক গড়ে উঠবে। এরও একটা ইতিবাচক দিক আছে।
“আর বাতিঘরের স্টলে ভালো বিক্রি হয়েছে। আমরা সন্তুষ্ট। মেলার লোক সমাগমও ইতিবাচক।”
ছুটির দুই দিনে কত টাকার বই বিক্রি হয়েছে- এমন প্রশ্নে অন্তত পাঁচজন প্রকাশক বলেছেন, মেলার শেষ দিকে বিক্রির চিত্র পাওয়া যাবে।
তাদের ভাষ্য, প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের বিক্রয়কর্মীরা স্টলে ডিজিটাল ও অ্যানালগ দুইভাবেই বই বিক্রি করছেন। নগদ টাকা কিংবা মোবাইলেও আর্থিক লেনদেন হচ্ছে। যার কারণে মেলা শেষে কিংবা শেষের দিকে তারা বই বিক্রি ও আয়ের চিত্রটা পাবেন।