মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে টাস্কফোর্স গঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সচেতনতা ও হটলাইন চালুসহ ছয়টি প্রস্তাব করেছে আঁচল ফাউন্ডেশন।
Published : 14 Sep 2024, 08:25 PM
সরকারিভাবে মানসিক স্বাস্থ্যসেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়ে সঠিক পরিবেশ তৈরির তাগিদ দিয়েছে আঁচল ফাউন্ডেশন।
এজন্য টাস্কফোর্স গঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং হটলাইন চালুসহ ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেছে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাজ করা বেসরকারি এ সংগঠন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের সভাপতি তানসেন রোজ বলেন, “মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা সঠিক ইকোসিস্টেম তৈরি করতে ব্যর্থ হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানসিক স্বাস্থ্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
লিখিত বক্তব্যে ছয়টি প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি বলেন, মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকে গণমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য অভিজ্ঞ মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবীদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স তৈরি করতে হবে। এ সম্পর্কিত সমস্যা উদঘাটন করে সমাধানের ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করতে হবে।
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে আহত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্তদের তালিকা করে মানসিক সেবা নিশ্চিতের প্রস্তাবও করেন তিনি। সরকারি/বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের সেবা নিশ্চিতের কথা বলেন তিনি।
আরেকটি প্রস্তাবে তিনি বলেন, “প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং মনোবিজ্ঞানি/মনোচিকিৎসকদের সমন্বয় করে সকল জেলা-উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে একটি মানসিক স্বাস্থ্য কর্নার তৈরি করা। প্রয়োজনে এলাকাভিত্তিক শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ট্রেনিংয়ের আওতায় এনে দক্ষ জনবলে রূপান্তর করা এবং প্রয়োজনে তাদের মাধ্যমে স্থানীয় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সচল রাখা।”
সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের জন্য ‘ট্রমা রিকভারি’ কর্মশালা এবং মানসিক স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা।
সরকারি উদ্যোগে একটি 'হটলাইন সেবা' চালু করা, যাতে ফোন করে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া যায়।
সেইসঙ্গে একটি গবেষণা সেল গঠন করা এবং বায়োইনফরমেটিক্স ব্যবহার করে সেবা পরবর্তী পুরো সময়ের গবেষণালব্ধ তথ্য জাতীয়ভাবে সংরক্ষণ করা।
তানসেন রোজ বলেন, ২০১৯ সালের ২৫শে এপ্রিল প্রতিষ্ঠার পর থেকে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে জ্ঞানসম্পন্ন সচেতন প্রজন্ম তৈরিতে তাদের সংগঠনটি কাজ করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এডুকেশনাল অ্যান্ড কাউন্সেলিং সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক মেহজাবিন হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “রংপুরে যে নিহত হল আবু সাইদ, তার সঙ্গে থাকা একজনও জানিয়েছে, সেও ঘুমুতে পারছে না। নিদ্রাহীনতা, হুট করে রেগে যাওয়া, জিদ বেড়ে যাওয়া- এগুলো মানসিক অসুস্থতার উপসর্গ। শুরু থেকেই এজন্য কাউন্সিলিং দরকার।”
ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে আহত এরকম অনেকেই মানসিক চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন বলেও জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নাহিদ মাহজাবিন মোরশেদ, ‘ইয়্যুথ এক্টিভিস্ট’ ডা. জাহেদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন।