“১২/১৩ টাকা কেজির কয়লা এখন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে, ৩০টাকা কেজির লোহা কিনতে হচ্ছে একশ টাকার ওপরে।”
Published : 14 Jun 2024, 08:48 PM
নিত্যপণ্যের পাশাপাশি নির্মাণ সামগ্রীরও দাম বেড়েছে, যার ফলে কোরবানির মৌসুমেও উচ্ছ্বাস নেই কামারদের মধ্যে।
পশু জবাই ও মাংস কাটাকাটিতে ব্যবহার করা ধারাল অস্ত্র কেনাবেচার বড় অংশই হয় বছরের এই সময়ে। সেই হিসেবে ব্যস্ততা বেড়েছে এই পেশায় নিয়োজিতদের। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কামারপাড়ায় শোনা যাচ্ছে ঝনঝন শব্দ।
তবু কেন উচ্ছ্বাস নেই- সেই প্রশ্নের জবাব মিলল কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী বাজারের সবচেয়ে প্রবীণ কর্মকার মোজাম্মেল হকের কথায়।
তিনি বলেন, “প্রায় ৩৬ বছর ধরে এই পেশায় আছি। মায়া পরে গেছে বলে ছাড়তে পারি না। ১২/১৩ টাকা কেজির কয়লা এখন ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কিনতে হচ্ছে, ৩০ টাকা কেজির লোহা কিনতে হচ্ছে একশ টাকার ওপরে।
“সবকিছুর দাম বাড়লেও আমাদের তৈরি জিনিসপত্রের দাম তেমনটা বাড়েনি। ফলে অল্প লাভেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে।”
ছিনাই ইউনিয়নের বাসিন্দা ভবেন ও খগেন দুই ভাই। তারা প্রায় ৩৪ বছর ধরে এই পেশায়। পাশেই কাজ করছিলেন তাদের গ্রামের কৃষ্ণমোহন।
তারা জানান, তাদের গ্রামে ২৫টি ঘরের লোক কামারের পেশায় নিয়োজিত ছিল। এখন ৮ থেকে ১০ জন এই পেশায় আছেন, বাকিরা অন্য কিছু করেন। কারণ, ‘পোষায় না।’
কেবল উপাদানের দাম বৃদ্ধি তাদেরকে বিপাকে ফেলেনি। আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার বাড়ার আগে কৃষিকাজ, বাড়িঘর মেরামত ও গৃহস্থালি কাজে ব্যবহারের উপকরণ বানাতেন কামাররা। ব্যবসাটা তখন ছিল জমজমাট।
এখন কারখানা থেকে আসে দা-ছুরি। কেবল কোরবানির ঈদ এলেই লোকজন ছুটে আসে কামারদের কাছেই।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, “অর্থনৈতিক সংকট, কাঁচামালের উচ্চমূল্য এবং সামাজিকভাবে মর্যাদা না পাওয়ায় অনেকে পেশা পরিবর্তন করছেন।”
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় প্রায় ৮০ জন এবং পুরো জেলায় চার শতাধিক কামার আছে বলেও তথ্য মিলল তার কাছ থেকে।