আট বছর আগে মাদক ব্যবসার প্রতিবাদের জেরে ঢাকার পল্লবীতে স্কুলশিক্ষার্থী মেহেদী হাসান হত্যা মামলায় দুই সহোদরসহ ৮ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখার এ রায় ঘোষণা করেন।
অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি নান্নু মিয়া ও তার স্ত্রী শাহিনুর রহমানকে খালাস দেওয়া হয়েছে। তবে নান্নু মিয়া ও শাহিনুর রহমানের ছেলে ওলি যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তদের একজন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ফয়সাল, আশিক, রাসেল, ওলি, সাদ্দাম, রাব্বি ওরফে ছটু, ইমরান ও রাশিদ। এদের মধ্যে কেবল ওলিই বাংলাদেশি, অপর সাতজন বিহারি।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফারুকুল ইসলাম জানান, দণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও ৫ মাস কারাভোগ করতে হবে।
বিচারক আদেশে বলেন, এটি একটি হত্যা মামলা, যার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। তবে আসামিদের বয়স কম হওয়ায় এবং পূর্বে কোনো মামলা-মোকদ্দমা না থাকায় মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হলো।
গত ১১ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের দিন ঠিক করেন বিচারক।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মেহেদী হাসানের বাবা হাজী মো. মোশারফ হোসেন ঢালী পল্লবীর নিউ সোসাইটি মার্কেটে থান কাপড়ের ব্যবসা করেন। নান্নু ও শাহিনুর এলাকার মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বাসার পাশেই মোশারফ হোসেনের বাসা। স্থানীয় লোকজনসহ তিনি মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করেন।
২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওলি মোশারফ হোসেনের একমাত্র সন্তান ১৫ বছর বয়সী মেহেদী হাসানকে পাশের একটি ভবনে নিয়ে যায়।
তার ভাগ্নে অনিক ঘটনাটি দেখতে পেয়ে সবাইকে জানায়। সংবাদ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, মেহেদী অজ্ঞান অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। চিকিৎসার জন্য তাকে মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় মোশারফ হোসেন ১ অক্টোবর পল্লবী থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৭ সালের ১২ জুন ১০ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন সিআইডির পরিদর্শক মোকছেদুর রহমান। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে মামলার বিচার শুরু হয়।
বিচারক ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য শুনে এ রায় দেন।